সাংবাদিক আরিফুলের জামিন, জানে না পরিবার
মাদক মামলায় জামিন পেয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান। রোববার সকালে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা তাকে জামিন দেন।
তবে এই জামিন চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আবেদন করা হয়নি বা তিনি কোনো আইনজীবীও নিয়োগ দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার।
মোস্তারিমা সরদার জানান, ‘আমি আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাই। সেখানে গিয়ে শুনতে পাই, আরিফুলের জামিন হয়ে গেছে। কারাগারে গিয়ে শুনলাম, জামিন নিয়ে হাসপাতালে চলে গেছেন আরিফুল। কে আবেদন করল, কখন করল, কিছু জানি না।’
আরিফুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন জানান, ২৫ হাজার টাকা জামানত রেখে আরিফকে জামিন দেয়া হয়েছে। তবে মামলাটির আপিল চলমান।
এদিকে, মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাজা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
রোববার বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাংবাদিক আরিফকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানান কুড়িগ্রামের জেলার লুৎফর রহমান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।
তবে এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা মুঠোফোনে বলেন, ২৫ হাজার টাকার মুচলেকায় আরিফুলের জামিন হয়েছে। আবেদন কে করেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সুজাউদ্দৌলা বলেন, ‘কাগজপত্র না দেখে বলতে পারব না।’
এদিকে, মধ্যরাতে মাদকবিরোধী টাস্কফোর্সের অভিযানে আরিফুল ইসলামকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।