যুবলীগ পরিচয়ে মুজিববর্ষের নামে চাঁদা তুলে ইয়াবা সেবন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২০, ০৫:৪৮ PM , আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০, ০৫:৪৮ PM
চট্টগ্রামে মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে চাঁদা তুলে তা দিয়ে ইয়াবা সেবন করত যুবলীগের তিন নেতা। চাঁদা আদায়ের অভিযোগে তাদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছে তারা। গ্রেফতাকৃতরা নিজেদের পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী বলে পরিচয় দিয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন-কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার মৃত দিলীপ বড়ুয়ার ছেলে বাটুল বড়ুয়া (৩৮), নগরের কোতোয়ালি থানার হেমসেন লেনের বাসিন্দা মৃত গোলাম শরীফের ছেলে শাহজাহান (৪৫) ও নন্দনকানন এলাকার মৃত শেখ গোলাম সাদমানির ছেলে শেখ রিয়াজ আহমেদ রাজু (৪০)। এদের মধ্যে বাটুল বড়ুয়া নিজেকে নগরের চকবাজার ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার সবাই ইয়াবা আসক্ত। মুজিববর্ষের নামে টাকা তুলে তারা ইয়াবার পেছনে খরচ করতেন। শুক্রবার (৬ মার্চ) রাতে নগরের কোতোয়ালি থানার নন্দনকানন এলাকা থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (৭ মার্চ) দুপুরে কোতোয়ালি থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ।
তিনি জানান, ৪ মার্চ নিজেদের যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে নন্দনকানন এলাকার ‘ত্রিএ হোম স্কেচ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। চাঁদা দিতে না চাইলে প্রতিষ্ঠানের মালিককে গালিগালাজ করেন ও ভীতি প্রদর্শন করেন। এ সময় তারা ৬ মার্চ টাকা নেয়ার জন্য আবার আসবেন বলে জানান।
শুক্রবার বিকেলে ওই প্রতিষ্ঠানে এসে টাকা দাবি করলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ চাঁদাবাজ রিয়াজ ও শাহজাহানকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও তিনজনের নাম পুলিশকে জানায়। সেই সূত্রে রাতে অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নামধারী চাঁদাবাজ বাটুল বড়ুয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দলের আরও দুই সদস্য লিটন ও রনিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মুজিববর্ষের নামে চাঁদাবাজির দায়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, “গ্রেফতাররা নিজেদের যুবলীগ দাবি করলেও গত ৪-৫ মাস ধরে ‘স্বপ্ন চূড়া’ ও ‘একতা যুব সংঘ’ নামে দুটি ভুয়া ক্লাবের প্যাড ব্যবহার করে নগরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছিলেন। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত চার মাসে তারা ৩৭ হাজার টাকার চাঁদাবাজি করেছেন। তারা নিজেদের যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছিলেন।”
তিনি আরও জানান, গ্রেফতাররা সবাই ইয়াবা আসক্ত। চাঁদাবাজির টাকায় তারা ইয়াবা সেবন করতেন।’
গ্রেফতার বাটুল বড়ুয়া সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পুলিশকে জানান, তিনি নগরের চকবাজার ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। এই কমিটি চার-পাঁচ বছর আগের, এখন সে কমিটি আছে কি না তিনি জানেন না। তবে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বিদেশে থাকায় তার পক্ষ হয়ে এই চাঁদাবাজি করছিলেন তারা। কয়েকবছর আগে রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য তারা ‘একতা সংঘ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। পরে ‘স্বপ্ন চূড়া’ নামে আরও একটি ভুয়া সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি। এই দুটি সংগঠনের নামে মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আবারও চাঁদাবাজি শুরু করেন তারা।