শ্বশুরবাড়ির উপহার ১০ বোতল ‘হুইস্কি’!
নববিবাহিত জামাই কি খালি হাতে শ্বশুরবাড়িতে যেতে পারেন? মিষ্টি, জিলিপি, সন্দেশ, আঙুর, তরমুজ ... হরেক রকম মুখরোচক খাবার সম্ভার নিয়ে যাওয়াই এক্ষেত্রে প্রচলিত রীতি। মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে শাশুড়ি বলবেন-'বাবা, এতো কিছু আনার কী দরকার ছিল'। লাজুক মুখে জামাই হয়তো উত্তর দিবেন 'এ আর এমন কী, আম্মা। তাড়াহুড়ো করে চলে আসলাম, কিছু যে কিনব, সেই সময়ই হয়নি'।
সিলেটের জৈন্তা উপজেলাধীন উত্তর নোয়াকাইল গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কাঠমিস্ত্রী মোহাম্মদ সাইফুল আলমও এ রীতির একজন কঠোর অনুসারী। ব্যাগ ভর্তি উপহার নিয়েই শ্বশুরবাড়ির দাওয়াতে রওনা করেছিলেন তিনি। নতুন জামাইর আগমন উপলক্ষ্যে হয়তো সেখানে পোলাও-কোর্মা বা এ ধরনের কোন উপাদেয় খাবার রান্নাও হয়ে থাকবে। কিন্তু কথা নাই বার্তা নাই, কিছুক্ষণ আগে (২৯ ফেব্রুয়ারি, সন্ধ্যা ৭:২০) মাঝরাস্তায় আমরা তাকে উপহারসামগ্রীর প্যাকেটসহ ধরে ফেললাম! কাজটা কি ভালা হইলো?
শুনুন তবে। পার্শ্ববর্তী কাজী পাত্তন গ্রামে সাইফুলের শ্বশুরালয়। শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত পড়েছে। আর দাওয়াত খেতে যাওয়ার সময় নিয়মানুযায়ী নিয়েছেন উপহারসামগ্রীর প্যাকেটও। ভাবছেন,তাহলে আর সমস্যা কী! সবকিছু ঠিকই তো আছে! না ভাই, সব ঠিক নাই। আবহমান কাল থেকে এই দেশের জামাইরা মিষ্টান্ন -ফলফলাদি নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলেও সাইফুল সাহেব (২২) এক্ষেত্রে যোগ করেছেন ভিন্ন এক মাত্রা। উপহার হিসেবে মিষ্টি - ফলের বদলে নিয়েছিলেন মদের বোতল। চোখ কচলায়ে আবার পড়ুন। না, ভুল দেখছেন না। পাক্কা ১০ বোতল মদ নিয়েই শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন সাইফুল। তাও যে সে মদ নয়। দামী ব্রান্ড 'অফিসার্স চয়েস' হুইস্কির পুরো ১০টি ৭৫০ মিঃলিঃ বোতল নিয়ে তবেই শ্বশুরবাড়ির দাওয়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। ঘরে খাওয়ার সময় হয়ত বাংলা চোলাই মদ দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি? সেখানে তো আর নিম্নমানের যে সে মদ নিয়ে হাজির হওয়া চলে না। একটা মানসম্মান আছে না! প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনেকবার জানতে চেয়েছিলাম, ঠিক কার জন্য নেওয়া হচ্ছিল এই অমূল্য (!) উপহার। মুখ খুললেন না তো খুললেনই না। চমকপ্রদ একটা অধ্যায় অজানাই রয়ে গেল।
যা হোক, আমার ফেসবুক আইডিতে যে সকল বিবাহিত ভায়েরা আছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন প্রচণ্ড বোকা কিছিমের। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময় কি নিবেন, কি নিবেন না... এই কনফিউশনে পড়ে যান, তাদের জন্য একটা অপশন বাড়ল কিন্তু!
লেখা: ফেসবুক থেকে সংগৃহিত