যেভাবে সুন্দরীদের মাধ্যমে ভিআইপিদের ফাঁদে ফেলতেন পাপিয়া
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া অস্ত্র ও মাদক এবং জাল টাকার পৃথক তিন মামলায় আটক হয়েছেন। তিনি অতিথিদের প্রথমেই নিয়ে যেতেন গুলশানের অভিযাত পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা ওয়েস্টিনে।
সেখানে লাঞ্চ ও ডিনার শেষে নিয়ে যেতেন তার নামে বরাদ্দকৃত ব্যয়বহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইটে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট জানান, ২৩ তলা ঢাকা ওয়েস্টিন হোটেলের লেভেল-২২ এ ১৪১১ বর্গফুট জায়গাজুড়ে প্রেসিডেনসিয়াল স্যুইট।
সেখানে সুন্দরী তরুণীদের অতিথিদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠক করাতেন পাপিয়া। এরপর পছন্দের তরুণীকে নিয়ে গোপন কক্ষে প্রবেশ করতেন অতিথিরা। ওয়েস্টিনের ওই স্যুইটের প্রতিরাতের ভাড়া দুই হাজার ডলারের মতো।
পাপিয়ার ঘনিষ্ঠতা ছিল যুব মহিলা লীগের শীর্ষস্থানীয় তিন নেত্রীর সঙ্গেও। ওয়েস্টিন হোটেলের কর্মকর্তারাও জানত তার অপকর্ম সম্পর্কে। ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরাও যেতেন হোটেল ওয়েস্টিনে। রিমান্ডে প্রতিদিনই এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন পাপিয়া। তবে এসব তথ্য যাচাই করতে ওয়েস্টিন হোটেল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। হোটেলের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
এদিকে পাপিয়া ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে ন্যস্ত হয়েছে।
তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে বুধবার বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিএম ফরমান আলী বলেন, ‘বিমানবন্দর থানার এক মামলার রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে নানা তথ্য দিয়েছেন পাপিয়া। যে তথ্য পাচ্ছি তাতে অবাক হচ্ছি। যাচাই করা ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গে হোটেলের কারা জড়িত, তার অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার পার্টনারই, জাল টাকার উৎস, কাদের আশ্রয়-প্রশয়ে এ পর্যায়ে এসেছেন- সব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
তিনি জানান, প্রতারণার শিকার কয়েক ব্যক্তি থানায় এসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে গেছেন। সবকিছুই তদন্ত করা হচ্ছে। পাপিয়া ও তার স্বামী এবং দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অস্ত্র ও মাদকের পৃথক মামলা হয়েছে শেরেবাংলানগর থানায়।