চুরির অপবাদে মেয়েকে হত্যার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যা
যশোরের শার্শায় স্বর্ণের চেন চুরির মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে নিজের চার বছরের মেয়েকে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন জুলেখা বেগম নামে এক অন্তঃসত্ত্বা মা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে। আটক নারীরা হলেন- ওই গ্রামের আলাউদ্দীনের স্ত্রী রেসমা বেগম ও মেয়ে জুলি খাতুন।
গর্ভবতী মাসহ সন্তানের মৃতের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, অপমান সইতে না পেরে জুলেখা তার নিজ কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে।
নিহতের স্বামী আল মামুন বলেন, স্বর্ণের চেইনটা আমার শাশুড়ি জুলেখাকে (স্ত্রী) দিয়েছিল। আর এ নিয়ে এমন অপবাদ সহ্য করতে না পেরে সে মেয়েকে মেরে আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
নিহতের ননদ সিমা খাতুন জানান, ৬ মাস আগে প্রতিবেশী আলাউদ্দীনের বাড়ি থেকে একটি স্বর্ণের চেইন চুরি হয়। গত শনিবার দুপুরে তার ভাবি জুলেখা আলাউদ্দীনের দোকানে যান কেনাকাটা করতে। এসময় আলাউদ্দীনের মেয়ে জুলি তার ভাবি জুলেখার গলা থেকে জোর করে চেইন খুলে নেন এবং চুরির অপবাদ দিয়ে আটকে রেখে মারধরও করেন। বাড়ি ফিরে এসে পরের দিন রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেয়েকে গলাটিপে হত্যা করার পর ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
জুলেখা খাতুনের মামাতো ননদ একই গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে সীমা খাতুন জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে তার ভাবীকে অনেক ডাকাডাকির পর কোনো সাড়া শব্দ না দেয়ায় সন্দেহ হয়। জানালা দিয়ে দেখা যায়, তার ভাবী ঝুঁলে রয়েছে। তখন তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে লাশটি নামানোর পর খাটের উপরে তার ভাইয়ের মেয়ে আমেনার দেহটি পড়ে থাকতে দেখি। পরে এলাকাবাসী শার্শা থানায় ও স্থানীয় ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নাভারন সার্কেলের এএসপি জুয়েল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুলি বেগম ও তার মাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।