৩১ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:১০

এক হাজার টাকার জন্য নারী ভাড়াটিয়াকে পেটালেন বাড়িওয়ালা

  © টিডিসি ফটো

বাড়ি ভাড়ার পরিশোধ করতে না পেরে মধ্যবয়সী এক নারীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বাসার মালিকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম খুশি বেগম (৪৮)।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল শহরের শিমুলতলী এলাকায় বাসা ভাড়া দিতে দেরি হওয়ায় বাড়ির মালিক খুশি বেগমকে মারধর করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগের পর থেকে খুশি নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন।

এ ব্যাপারে বিচার দাবি করে খুশি বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমাকে তারা মারধর করেছেন। চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়ে আছে। সম্পূর্ণ শরীর ব্যথা। আমার চলাচল করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি এর বিচার চাই। আমি খুব আতঙ্কে শহর দিয়ে চলাচল করছি। তারা পেলে আমাকে আবার মারধর করবেন।

ভুক্তভোগী আরও জানান, শহরের শিমুলতলী মান্নান উকিলের বাসায় খুশি বেগম, সাজেদা বেগমসহ চার নারী বাসা ভাড়া করে থাকতেন। গত তিন মাস আগে সাজেদাসহ দু’জন পালিয়ে যায়। পরে খুশির বাসা ভাড়া দিতে কষ্ট হওয়ায় অ্যাডভোকেট মান্নান মিয়ার বাসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত মাসে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সময় খুশির কাছে বাসা ভাড়া দাবি করেন মান্নান মিয়ার ছেলে রনি। তিন হাজার টাকার মধ্যে দুই হাজার টাকা পরিশোধ করেন খুশি। বাকি এক হাজার টাকার পরিবর্তে খুশির টিভি রেখে দেন রনি। টাকা দিয়ে টিভি নেওয়ার কথা জানায় খুশিকে। গত বুধবার খুশি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভাড়ার অবশিষ্ট টাকা দাবি করেন রনি। টাকা দিতে না পারায় রনিসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। কক্ষের দরজা বন্ধ করে খুশিকে মারধর করেন তিনি। এসময় খুশির কাছে থাকা দুই হাজার টাকা ও দু’টি কানের দুল খুলে নেন রনির পরিবারের সদস্যরা। পরে খুশি কাঁদতে কাঁদতে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সনদপত্র আনতে পাঠায়। হাসপাতাল থেকে খুশি সনদপত্র আনার সময় তার হাতে থাকা সেটি ছিনিয়ে নেয় রনিসহ ৭/৮ জন লোক। তারপরও কৌশলে হাসপাতালের নার্সের সহযোগিতায় কিছু ওষুধ লিখে নিয়ে চলে আসেন।

অভিযুক্ত রনি জানান, খুশির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিনি এসব অভিনয় করছেন। আমি তাকে ডেকে ভাড়ার কথা জিজ্ঞেস করেছি।

বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি আইন বহির্ভূত। আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি। ভাড়ার টাকার জন্য একজন নারীকে মারধর করা কোনোভাবেই উচিত হয়নি।