ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, স্কুলে যাওয়া বন্ধ
প্রতিবেশির বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী। ফলে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ের পরিবারটি লোক-লজ্জায় পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধামরাইয়ের চৌহাট ইউনিয়নের মুন্সীচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, চরম অভাব অনটনের সংসারে অন্তঃসত্ত্বা ওই স্কুলছাত্রী পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তার বাবা বলেন, ‘ধর্ষকের কঠিন বিচার দেখবো। এজন্য টাকার বিনিময়েও আপোষ করিনি। এখন তো দেখি মেয়েকেও বাঁচানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সময়মতো তিন বেলা খাবারও দিতে পারছি না। গ্রামবাসীর তো নানান কথা তো আছেই।’
তিনি জানান, অন্তঃসত্বা হওয়ায় পড়ালেখার ইচ্ছা থাকলেও লজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে মেয়ে। জানা গেছে, শিশুটি স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। সে প্রতিবেশি মোকছেদ আলীর (৫৫) বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যেতো।
এর একপর্যায়ে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মোকছেদ ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে শিশুটিকে। এভাবে হুমকির মুখে একাধিকবার ধর্ষণ করায় অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ে স্কুলছাত্রী।
পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মাতব্বররা ধর্ষিতার পরিবারের সঙ্গে আপোষের চেষ্টা চালায়। চার সন্তানের জনক ধর্ষক মোকছেদ এ প্রচেষ্টা চালায়। মাতব্বররা ধর্ষিতা ও তার বাবাকে আটকও করে রাখে কয়েকবার।
এমনকি ধামরাইয়ের নান্দেশ্বরী গ্রামের বাসচালক চান মিয়ার বাড়িতে প্রায় ১২ ঘণ্টা আটকে রেখে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আপোষের চেষ্টা চালায়। এমনকি ধর্ষণের ঘটনা আপোষ করা হলো মর্মে তার বাবার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চৌহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আল আমীন, মুন্সিরচর গ্রামের মরন আলী, ধর্ষক ও তার ভাই দরবার আলীসহ কয়েকজন।
পরে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দ্বিপক চন্দ্র সাহা ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় মামলা নেন। এছাড়া ধর্ষক মোকছেদ ও কয়েকজন মাতববরকে গ্রেপ্তার করেন। তবে ধর্ষক জেল হাজতে থাকলেও মাতব্বরা জামিনে রয়েছেন।
ওসি দ্বিপক চন্দ্র সাহা জানান, শুধু ধর্ষক নয় ধর্ষণে সহযোগিতা করার কারণে তার স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।