দশম শ্রেণীর দুই ছাত্রকে আ’লীগ নেতার বলাৎকার, হাসপাতালে ভর্তি
দশম শ্রেণীর দুই ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আটক ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম শেখ শহিদুল ইসলাম লালা (৪৮)। লালা কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ফতেহ আলী সিকদার পাড়া গ্রামের মৃত আবদু শুক্কুরের পুত্র। পাশপাশি আটককৃত তার সহযোগী নওশাদ (২২) একই উপজেলার কৈয়ারবিল গ্রামের আবদুল মাবুদের পুত্র।
অপরদিকে নিপীড়নের শিকার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া দুই ছাত্রকে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমদের মধ্যে এক জনের মা বাদী হয়ে ২৪ জানুয়ারি সকালে কুতুবদিয়ায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।
থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ইসলাম লালা ও তার সহযোগী নওশাদ বৃহস্পতিবার সকালে কুতুবদিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই ছাত্রকে নানা প্রলোভনে ফেলে উপজেলা গেটস্থ তার দোকানের পেছনের কক্ষে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মুখ বেঁধে দুই ছাত্রকে কয়েক দফায় বলৎকার করে। পরে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখায়।
এক পর্যায়ে ওই দুই শিক্ষার্থী ব্যাথায় কান্নাকাটি শুরু করলে সন্ধ্যার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়। ওই দিন সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় বাসায় গিয়ে ওই ছাত্র তার পরিবারের কাছে আওয়ামী লীগ নেতার এসব কুকর্মের কথা খুলে বলার পর তাদের কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রাতেই পরিবারের লোকজন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা একজোট হয়ে উপজেলা গেটে এসে ওই নেতাকে দোকানে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
পরে পুলিশ এসে রাতেই আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম লালা ও তার সহযোগী নওশাদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। শুক্রবার বিকালে আটককৃতদের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরোঙ্গজেব মাতবর বলেন, নিপীড়নকারী শেখ শহিদুল ইসলাম লালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে ঘটনা ঘটেছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে তারা আটকও হয়েছেন। আমি একটা সভায় আছি। সভা শেষ করে তার বিরুদ্ধে কি দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা জানাতে পারব।
কুতুবদিয়া থানার ওসি দিদারুল ফেরদৌস জানান, নিপীড়নের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাসহ অপর একজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন ভিকটিম ছাত্রের মা। ভিকটিম ছাত্রদের কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। পাশপাশি আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও ওসি জানান।