অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র হত্যায় চার জনের ফাঁসি
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে চয়ন একাডেমির অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র কাউসার (১৩) হত্যা মামলায় চার জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো.নজরুল ইসলাম এই মামলায় চার আসামির ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, জামির আলী এবং শাহজাহান।
দণ্ডিতদের মধ্যে জামির আলী পলাতক এবং অপর তিন আসামি কারাগারে আছেন। তাদের রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির করা হয় এবং রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, আসামি জামির শাহজাহানকে টাকার প্রয়োজন বলে কাউসারকে টাকা পাওয়ার জন্য অপহরণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১২ সালের ১৬ মে সকাল থেকে ১৭ মে বিকেলের মধ্যে স্কুলছাত্র কাউসারকে অপহরণ করে। পরে আলতাফ হোসেন ও ফরিদার বাসায় খাটের নীচে তাকে আটকে রাখে। পরে চিরকুট এবং মোবাইলের মাধ্যমে কাইসারের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। ওই ঘটনায় কাউসারের পরিবার কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তবে পুলিশ কাউসারকে উদ্ধার করতে না পারায় পরিবারের লোকজন একপর্যায়ে ওই বছর ১৯ মে নবাবগঞ্জে অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। তবে টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা কাউসারকে ফেরত না দেয়ায় ওই বছর ২৬ মে অপহরণের মামলা হয়। মামলাটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। মামলায় প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পায়।
এরপর অপহরণকারীরা ইব্রাহিমের কাছে আরও এক লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর ওই বছর ১৫ আগস্ট মো. জামির গ্রেপ্তার হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলতাফ, তার স্ত্রী ফরিদা ও শাহজাহানও গ্রেপ্তার হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় তিন মাস পর ওই বছর ১৮ আগস্ট সীমানা দেয়ালঘেরা একটি জমির মাটি খুঁড়ে কাউসারের লাস উদ্ধার হয়।
কাউসারের বাবা মো. ইব্রাহিম আলী কামরাঙ্গীরচরের জাউলাহাটিতে সপরিবারে থাকেন এবং সেখানে তার একটি মুদির দোকান আছে। আসামি শাহজাহান সেখানকার একটি সেলুনে কাজ করতো। ওই সেলুনে যাওয়ার সুবাদে শাহজাহান এবং কাউসারের মধ্যে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়।
এ ঘটনায় আসামিদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, অপহরণের পরপরই চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগে কাউসারকে অচেতন করে রাখা হয়। পরদিন বিকেলে চেতনা ফিরে এলে আবারও তাকে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রাতে সে জেগে উঠলে জামির ও ফরিদা তার পা চেপে ধরে এবং আলতাফ বুকের ওপর বসে। শাহজাহান তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।