জন্মের ৪০ দিনেও জিদনীকে ছুঁয়ে দেখেনি বাবা, পানিতে ফেলে গভীর রাতে
স্ত্রীর ছেলে সন্তান না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ৪০ দিন বয়সী জিদনী নামের এক কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে পাষণ্ড বাবা। বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর সিকদার।
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে নিহত জিদনীর মা সীমা বেগম বাদী হয়ে আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাহাঙ্গীর সিকদারকে থানায় নিয়ে আসলে তিনি মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
জানা গেছে জাহাঙ্গীর সিকদার একটি পুত্র সন্তানের আশা করেছিলেন। এ কন্যা শিশু জন্মের পর থেকেই জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। প্রতিবেশীদের অভিযোগ কন্যা সন্তান জন্মের পর থেকেই জাহাঙ্গীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় এবং কন্যা সন্তানটি ছুঁয়েও দেখেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার জিদনীকে নিয়ে ঘরে শুয়ে ছিল। এ সময় তার স্ত্রী সীমা বেগম এবং তার শাশুড়ি পারুল বেগম ঘরের বাইরে গৃহস্থালী কাজ করছিলেন। শিশুটির মা সীমা বেগম এবং নানী পারুল বেগম কাজ শেষে রাত ১১টার দিকে ঘরে প্রবেশ করে শিশু জিদনী ও তার বাবা জাহাঙ্গীরকে দেখতে না পেয়ে ডাক-চিৎকার দেন।
এতে প্রতিবেশীরা এবং বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে আসেন। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘরের পিছনের ডোবা থেকে কাথায় মোড়ানো বিছানাপত্রসহ জিদনীর লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ রাত ৩টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেন।
এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাষণ্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পাষণ্ড বাবা জাহাঙ্গীর শিকদার কন্যা শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। হত্যার কথা স্বীকার করায় শনিবার পুলিশ বাবা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করেছে।
আমতলী থানার ওসি আবুল বাশার বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার কথা স্বীকার করায় শিশুটির বাবাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।