৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৩৬

চোখে কালো কাপড় বেঁধে ঢাবিতে ধর্ষণ-হত্যাকারীর প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড দাবি

  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশের সমাজের কালো এক আঁধারের নাম ধর্ষণ। এ কালিমার লেপন যেন থামছেই না। একের পর এক ঘটে যাচ্ছে অমানবিক নিষ্ঠুর এই উপাখ্যান। এমনই বক্তব্যকে সামনে রেখে চোখে কালো কাপড় বেঁধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক আহমেদের ছোট বোন ইয়াসফাকে ধর্ষণ ও হত্যাকারী এনামুলের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ডের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমি হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছি সরকারের কাছে। দ্রুত ট্রাইবুনাল গঠন করে যথাযথ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আর যেন কোন বাবা মায়ের কোল খালি না হয়। সবার সচেতন হতে হবে। আজকে আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। আর কোন বোনের যাতে এরকম না হয় হয়।

দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কতটুকু আশাবাদী প্রশ্নে সাংবাদিকদের বলেন, দেশে এরকম অহরহ মামলার বিচার না হয়ে পড়ে আছে। আইন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বিলম্ব করে। কিন্তু সেটা উচিত না। যতদিন পর্যন্ত বিচার না হবে ততদিন পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি মানববন্ধন চলবে বলে ঘোষনা দেন তিনি।

ডাকসুর সদস্য রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য বলেন, আজকে ইশতিয়াকের বোন মানে আমাদের বোন। আমাদের বোনের ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ, মর্মাহত এবং ব্যাথিত। এছাড়াও ডাকসুর পক্ষ থেকে বিচারের দাবি জানান তিনি। যদি সুষ্ঠু বিচার করা না হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে উল্লেখ করেন।

মানববন্ধনে জানানো হয়, দুই ভাই-বোনের মধ্যে ইয়াসফা ছিলো ছোট। পড়তো শিশু শ্রেণীতে। বড় ভাই ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকতেন বাড্ডা নতুন বাজার এলাকার। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না ইয়াসফাকে। ইয়াসফার মা তাদের বাসার ভাড়াটিয়ার ছেলে এনামুলকে সাথে নিয়ে খোঁজাখুঁজি করছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন এনামুলের বাসায় খুঁজতে বললে দরজা খুলতেই এনামুলের মায়ের সামনে থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় সে। দুই হাত বাধা, মুখে কাপড় দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ইয়াসফাকে। এনামুল তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে এবং হাত পা মুখ বেঁধে রেখে খাটের নিচে ফেলে রাখে। এই অবস্থায় ইয়াসফাকে উদ্ধারের পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত পৌনে আটটার দিকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় এনামুলকে প্রধান আসামি ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।