মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাদের মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার অভিযোগে আটক মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে গাজীপুর মহানগর শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) টংগী সরকারি কলেজের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় মানববন্ধন থেকে, ‘নূর তুই রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানে চলে যা’ বলে বিভিন্ন শ্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি মোঃ আদনান হোসেন।

এসময় ভিপি নুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় উস্কানীমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে মোঃ আদনান হোসেন বলেন, ‘নুরুল হক নুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি, তার কর্মকাণ্ড থাকবে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক। ভিপি হিসেবে সে ছাত্র অধিকার নিয়ে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের কাজের সমালোচনা বা ভারত নিয়ে কোন কথা বলা তার কাজ না। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাটক করে নিজের দিকে ফোকাস নিচ্ছেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন আদনান।

এর আগে মানববন্ধন কর্মসূচীতে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গাজীপুর মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন আলম। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস আসলেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আর সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নুরকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নকারীদেরকে আটক করা হলো। আমরা এর তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান, দিল্লি না ঢাকা ঢাকা ঢাকা, ছাত্রলীগের কালো হাত ভেঙে দাও ঘুড়িয়ে দাও, শিক্ষা ছাত্রলীগ এক সাথে চলে না- এ স্লোগান শুনে যার রক্ত গরম হবে না সে নিঃসন্দেহে ৭১-এর স্বাধীনতাবিরোধীদের ছানাপোনা। এভাবেই ৭১-এ ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান বলে স্লোগান দিত রাজাকাররা।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজ যদি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নিরব হয়ে যায়- আর কোনদিন মুক্তিযুদ্ধার সন্তানেরা মথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে না।’

এসময় বক্তারা বলেন, বিগত কয়েকদিন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংগ্রম পরিষদ নামের একটি সংগঠন ও তার নেতা নুরুল হক নুর বহিরাগত কিছু ছেলেদের নিয়ে এসে ঢাবির পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তারা দেশবিরোধী, সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিল। তখন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তার প্রতিবাদে মানববনন্ধ করে।

তারা বলেন, ‘তারা বিভিন্ন বহিরাগত ছেলেদের নিয়ে ডাকসুর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নুরুল হক নুর ও তার সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। যার সম্পূর্ণ দায়ভার বিনাবিচারে দেয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতৃবৃন্দের ওপর।’

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গাজীপুর মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আয়ন হাসান নাহিন, বলেন ‘নুরুল হক নুর একজন সিম্প্যাথি সিকার। সে নিজে মেরে নিজেই আহত হয়। নুর যখন রাজপথে কোনো অবস্থান করতে পারেনি, তখন সে পরশুর ঘটনাটিকে একটি নাটকীয় রূপ দিয়ে সিম্প্যাথি সিক করতে এবং নিজেকে হাইলাইট করার জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উপর চাপিয়ে দেয়। কোনো তদন্ত ছাড়াই আল মামুন ও ইয়াসির আরাফাত তুর্য সহ মেহেদী হাসান শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা তাদের মুক্তি চাই।’

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গাজীপুর মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন আলম এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন, শাখার দপ্তর সম্পাদক মোঃ আশরাফুল ইসলাম, টংগী পুর্ব থানা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, পুর্ব থানা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের  সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোঃ নিবিড় হোসেন প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ