জন্মদিন পার্টিতে মদ্যপান, প্রাণ গেল ৩ বন্ধুর
কুষ্টিয়ায় বন্ধুর জন্মদিনে কোমল পানীয় টাইগারের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে পান করে তিন কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়েছে আরও দিনজন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৭টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে জাহিদুর রহমান সাজিদ (১৯)। বিকেএসপির বাস্কেট বল খেলোয়ার সে। এছাড়া থানাপাড়া এলাকার আরমান আলীর ছেলে পাভেল (২০) এবং কুঠিপাড়া এলাকার সাগরের ছেলে ফাহিম (১৮)।
অসুস্থ্য তিনজন হলেন- শান্ত, আতিকুল ও সুরুজ। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়িটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ ছয়জনই কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র। তবে এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাদেরকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা পাকস্থলী ওয়াসসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোমল পানীয়ের সাথে অন্য কোন ধরনের কেমিক্যাল মিশ্রণ পান করায় বিষক্রিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কুষ্টিয়া ইসলামি কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চিকিৎসাধীন শান্ত বলেন, ‘বন্ধু সুরুজের জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে কেক কাটাসহ পার্টির আয়োজন ছিল। সেখানে কোমল পানীয় টাইগারসহ হালকা খাবার ব্যবস্থা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আতিকুল ইসলাম কটা নামের এক বন্ধু হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে শিশিতে অ্যালকোহল নিয়ে আসে। ওইটা কোমল পানীয়ের সাথে মিশিয়ে সবাই পান করি। খাওয়া শেষে আড্ডা দিয়ে বাড়ি চলে যাই। বেলা ৩টার দিকে আমি চরমভাবে পেটে ব্যথাসহ শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়ি। হাসপাতালে আসার পর দেখি আমরা যে কয়জন পার্টিতে ওই পানীয় খেয়েছিলাম সবাই অসুস্থ হয়ে এখানে এসেছে।’
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্ব পালনরত উপ-পরিদর্শক সামছুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, ছয় কলেজ ছাত্র বন্ধু জন্মদিনে পার্টির সময় মাদক জাতীয় কিছু পান করেছে। তার বিষক্রিয়া ঘটে থাকতে পারে।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমকে জানান, ‘মাদক জাতীয় কিছু পান করে শিক্ষার্থীর মৃত্যু ও অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ মুহূর্তে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। চিকিৎসকদের মতে চিকিৎসাধীন বাকিরাও বিপদমুক্ত নয়।’