গণপিটুনির পর বরখাস্ত হলেন ৫ পুলিশ সদস্য, ৩ জনের রিমান্ড আবেদন
দুই যুবকের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে হয়রানির সময় জনতার গণপিটুনির শিকার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলামসহ চার কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের ওই পাঁচ সদস্য ও দুই সোর্সকে আসামি করে সখিপুর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সাতজনের নামে মাদক আইনে মামলাটি দায়ের করেন সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুল হক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের সোর্স হাসানসহ দুই যুবক প্রথমে ঐ বাজারে গিয়ে ফরহাদ মিয়ার ছেলে বজলুর রশিদকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে পুলিশের দুই সোর্স মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রিয়াজুল ইসলাম ও কনস্টেবল গোপাল সাহা ও রাসেলকে জানায়। সোর্সের খবর পেয়ে একটি সিএনজি নিয়ে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিগারেট এর প্যাকেটের ভিতর ইয়াবাসহ মাদক দিয়ে অপর দুই যুবককে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন তাদের সিএনজি ঘেরাও করে তিন পুলিশ ও দুই দলাল চক্রের সদস্যকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম এবং সখীপুর থানার ওসি(তদন্ত) লুৎফুল কবিরসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গুলরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলাম, কনস্টেবল ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মোজাটি গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো. রাসেলুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার ঢুলদিয়া গ্রামের জীবন সাহার ছেলে গোপাল সাহা, আ: হালিম ও তোজাম্মেল হক। এছাড়া পুলিশের সোর্স মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া ও সখিপুরের রাজাবাড়ী গ্রামের আল আমীন।
বুধবার একই কায়দায় এএসআই রিয়াজুল ইসরাম তার সহযোগীদের নিয়ে মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের টান পলাশতলী গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে আনোয়ারের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে তার কাছ থেকে নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সখিপুর থানার উপ পরিদর্শক মো. ওমর ফারুক জানান, এক এএসআই ও চার কনস্টেবল এবং দুই সোর্সের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৬। তাছাড়া জনতার হাতে আটক পুলিশের তিন সদস্য ও এক সোর্সকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে নেয়া হয়েছে।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর হোসেন জানান, এ বিষয়ে পুলিশের পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে বলে তিনি জানান। পলাতক দুই পুলিশ কনস্টেবল ও এক সোর্সকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।