২৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:২৫

আদালতে আইএসের টুপি মাথায় রিগেন, কোথায় পেল সে?

  © সংগৃহীত

গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার মামলার রায়ে সাত আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত  এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগেন, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

এরমধ্যে রিগানের আদালতে উপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। আইএসের স্লোগানসহ টুপি মাথায় দিয়ে এসেছিলেন তিনি। কড়া প্রহরার মধ্যে টুপিটি সে কোথায় পেল তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

সাংবাদিক ফারজানা রুপা এ ধরণের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘রাকিবুল হাসান রিগেন। হোলি আর্টিজান হামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৭ জনের ১! আই এসের টুপি মাথায় এসেছিল আদালতে। কারাগার, আদালত নাকি পথের কোথাও টুপিটা পেলো??!’

সেখানে নয়ন সরকার নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এটা অতন্ত ভয়ংকর, ভবিষ্যৎ হুমকিস্বরুপ। প্রসাশন বার বার বলে ISIS অস্তিত বাংলাদেশে নেই, কিন্তু এটা কি প্রমান করে না, বাংলার মাটিতেও ISIS দাপটের সাথে সক্রিয় ?? এটা কি তার প্রতিক নয়? যা বারবার আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে । ‘

সাংবাদিক বাণী ইয়াসমিন হাসিও একই ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভূত কি তাহলে সর্ষের মধ্যেই ! রাকিবুল হাসান রিগেন। হোলি আর্টিজান হামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৭ আসামীর একজন। সে আইএসের টুপি মাথায় আদালতে এসেছিলো। এই টুপি সে কোথায় পেলো? কারা তাকে দিলো?’

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশসহ দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়।

হামলায় অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ডে’ পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। অভিযানে এক জাপানি ও দুই শ্রীলংকানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

জঙ্গি হামলার ঘটনায় ওই বছরের ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর এ চার্জশিট দাখিল করেন। ঘটনায় জড়িত ‘চিহ্নিত’ বাকি ১৩ জন এরই মধ্যে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর শেষ হয়।

গত ৩০ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতের কাছে আট আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এরপর চলতি মাসের ৬ নভেম্বর এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সব আসামির মৃত্যুদণ্ড চান।

আর ১৭ নভেম্বর এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।