আমার শরীর ওপরে নিচে আছড়ে পড়তে থাকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগে সোমবার দিবাগত রাত পৌণে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রেনে থাকা যাত্রীদের বর্ণনায় দুর্ঘটনার ভয়াবহ তথ্য জানা যাচ্ছে। উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন কাওসার (২৮)। তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাজরের হাড় ভেঙে গেছে তার, পায়েও আঘাত পেয়েছেন।
হাসপাতালের আবাসিক সার্জন আবু বকর সিদ্দিক বলেন, হাসপাতালে ১৩ জনকে আনা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট বছরের মেয়ে শিশুকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি নয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে কাওসার বলেন, ‘এত জোরে ধাক্কা খায় যে মনে হয়েছিল ১০ হাত ওপরে উঠে গেছে ট্রেন। এক ধাক্কায় আমার শরীর ওপরে উঠে নিচে আসনে আছড়ে পড়ে। ভেবেছিলাম কেউ বোমা মেরেছে।’
পড়ুন: ঘুমন্ত অবস্থায় ভাইয়ের কোলে ভাতিজার মৃত্যু হয়
কাওসার জানান, হবিগঞ্জের সদর উপজেলার উত্তর শ্যামলী গ্রামে তার বাড়ি। সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক তিনি। চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশে সোমবার শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন তিনি।
তিনি বলেন, মন্দভাগ রেল স্টেশনে এলাকায় আসা মাত্র ট্রেনটি সজোরে ধাক্কা খায়। তখন ভেবেছিলাম, কেউ বোমা মেরেছে! উদ্ধারকারীরা আসার পর পাশে পড়ে থাকা তিন বছরের শিশুর লাশ তাঁদের হাতে তুলে দিই। পরে আমাকে উদ্ধার করা হলে তখন আমি জ্ঞান হারাই।’
সেখানে চিকিৎসাধীন চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার জাহাঙ্গীর মাল (৪০) পেশায় মৎস্যজীবী। তিনি জানান, মাজার জিয়ারত করতে সিলেট গিয়েছিলেন তিনি। তাঁরও বাম পা ভেঙে গেছে।
এছাড়া মৌলভীবাজার হেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আবদুস সোবহান (৪০) মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তিনিও সেখানে চিকিৎসাধীন। পেশায় তিনি কৃষিজীবী।
পড়ুন: সেই শিশুটির পরিচয় মিলেছে