ফাঁসি নয়, পুড়িয়ে মারতে চাই
নুসরাতের হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি দেখে যেতে চান নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে । রায়ের পর পরিবারের সদস্যদের বাড়তি নিরাপত্তাও চান তিনি। এ ছাড়া রায়ের দ্রুত কার্যকরও চান তিনি।
এদিকে রাফির স্মৃতি গত ছয় মাসে একমুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন মা শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, ‘ঘুরে-ফিরে চোখের সামনে ভাসে ঝলসে যাওয়া নুসরাতের সেই বীভৎস ছবি, মেয়ের শরীরের পোড়া গন্ধ এখনও নাকে এসে লাগে। আমি ঘুমাতে পারি না।’
শিরিন আক্তার বলেন, ‘সেই ঘটনা সারাক্ষণ মনে ভাসে, শরীর ভারি হয়ে আসে। চলাফেরা করতে পারি না। ওই ঘটনার পরপরই মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ তবে কোনো ডাক্তারের কাছে যাননি বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলার রায় প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন ‘আমি চাই, অভিযুক্ত প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ সাজা হোক।’
শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়েকে ঘাতকরা যেভাবে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তেমন কঠিন সাজা যেন দেয়া হয় অভিযুক্ত প্রত্যেক আসামিকে। তাদের ফাঁসি দিলে তারা বিনা যন্ত্রণায় মরে যাবে। তাদেরও আমার মেয়ের মতো পুড়িয়ে সাজা কার্যকর করলে মৃত্যুর যন্ত্রণা বুঝতে পারত।’
নুসরাতের মৃত্যুর পর থেকে তার শয়নকক্ষে খাটের ওপর শুয়ে-বসে আহাজারি করেই সময় কাটে শিরিন আক্তারের। তিনি বলেন, রাতে তন্দ্রায় চোখ জুড়িয়ে এলে নুসরাতের মা মা ডাকে তন্দ্রা ছুটে যায়। তারপর আমার মেয়েটাকে খুঁজতে থাকি।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত। গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রে যান নুসরাত।