১৫ অক্টোবর ২০১৯, ২০:৪৮

ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে রেখে গলা কাটেন বাবা

বাবা, চাচাসহ পরিবারের সদস্যরা মিলে শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন বাবা। আর বাবার কোলেই ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু তুহিনকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে খুন করেন চাচা নাসির উদ্দিন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তুহিন হত্যার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, পুলিশের কাছে শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বাবা ও চাচা। আর সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। তারা এ হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, রোববার রাত আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান বাবা আবদুল বাছির। পরে বাবার কোলের মধ্যেই তুহিনকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে খুন করেন চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। পরে তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, বাবার সামনেই শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় তুহিনের বাবাসহ থানায় নিয়ে পাঁচজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানান বাবা ও চাচা।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন্নবী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, কোর্ট ইন্সপেক্টর আশেক সোজা মামুন, দিরাই থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম, সদর মডেল থানার ওসি শহীদুর রহমান, ওসি ডিবি মোক্তাদির হোসেন চৌধুরী, ডিআইও ওয়ান আনোয়ার হোসনে মৃধা প্রমুখ।

এদিকে তুহিনের বাবা আবদুল বাছির সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে তুহিন দ্বিতীয়। গত ১৫ দিন আগে তাঁদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। রোববার রাতে খেয়ে-দেয়ে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। রাত আড়াইটার দিকে তার এক ভাতিজি ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলে তাদের ঘরের দরজা খোলা। এরপর সবাই জেগে ওঠে দেখেন তুহিন নেই। তখন প্রতিবেশীদেরও ডেকে তোলা হয়। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এক পর্যায়ে বাড়ির পাশে রাস্তায় একটি কদম গাছের ডালে তুহিনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তারা।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া কেজাউড়া গ্রাম থেকে তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গ্রামের আবদুল বছির মিয়ার ছেলে।