৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০১

ভুয়া ভাউচারে ১০ কোটি টাকা লোপাট

  © ফাইল ফটো

ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে সরকারি বিভিন্ন দফতর, বাসভবন মেরামত ও উন্নয়নমূলক কাজ না করেই ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করে প্রায় ১০ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। ঝিনাইদহের এক ঠিকাদারের সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলীর মতবিরোধের জের ধরে এ দুর্নীতির বিষয়টি ফাঁস হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার ইবনে সাঈখ ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে যোগদানের পর থেকে একের পর অফিশিয়াল অনিয়ম, দুর্নীতিতে মেতে ওঠেন। তার এই অনিয়মের কারণে অফিসের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এখন যে যার মতো করে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী, কায়সার ইবনে সাঈখ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের ঠিকাদারি কাজে অধিকাংশই ভুয়া বিল তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, ঝিনাইদহ নন গেজেটেড ডরমেটরি ভবন, সরকারি কর্মকর্তাদের স্টাফ কোয়ার্টার, ঝিনাইদহ সদর থানার বেতার ভবন, পুরাতন ডিসি কোর্ট ভবন, মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউট, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসভবনসহ প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানে কোনো কাজ না করেই বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। এমনকি তার নিজের বাসভবন মেরামত দেখিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে বিল ভাউচার দাখিল করেও টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ শিল্পকলা একাডেমি চেয়ার স্থাপন এবং স্টেজ লাইট বাবদ ৬৭ লাখ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান দেখানো হয়েছে। অথচ সেখানে চেয়ার ও স্টেজ লাইটের কোনো হদিসই নেই। অভিযোগ অনুযায়ী, জালিয়াতির মাধ্যমে জনৈক সাইদুরের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আবার একটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজ একাধিকবার দেখিয়েও বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

কাজ না হওয়া উপরোল্লিখিত দফতরগুলোর প্রধানরা জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো কাজই করা হয়নি। অথচ কাজের নামে টাকা উঠিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তারা হতবাক। তারা অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার ইবনে সাঈখ অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার অজান্তে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’