ঘুমের মধ্যেও চিৎকার করে ওঠেন মিন্নি
বরগুনার প্রকাশ্যে কুপিয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও আসামি তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন কিশোরের বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। কারাভোগের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন। মিন্নির পরিবার জানিয়েছে, ঘুমের মধ্যে কেঁদে ওঠেন মিন্নি, চিৎকার করে ওঠেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মিন্নির ভীষণ অসুস্থ, উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু মামলার পরবর্তী তারিখ কাছাকাছি থাকায় ভালো কোনো হাসপাতালে ভর্তি করা যাচ্ছে না। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে।
জানা গেছে, বাবার বাড়িতে অবস্থান করা মিন্নি একপ্রকার মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। মা-বাবা ছাড়া আর কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে থাকেন।
মিন্নির বন্ধু ও স্বজনরা জানান, আগে মিন্নি ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল, চঞ্চল ও সদালাপী। কিন্তু এখন পাল্টে গেছেন। সারাক্ষণ চুপচাপ থাকেন। বিষন্নতা নিয়ে একাকি দিন কাটে মিন্নির। তার এমন জীবনযাপনে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্বজনরা।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘পুলিশ হেফাজতে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে মেয়েটার ওপর। দুই হাঁটুতে কালো দাগ রয়েছে মিন্নির। হাঁটুর ব্যথায় হাঁটতে পারে না। এখন কারও সঙ্গে কথা বলে না। কখনো কখনো কাঁদে। যে ঘরে মিন্নি থাকে সেই ঘরে রিফাতের সঙ্গে অনেক স্মৃতি তার। ঘুমের মধ্যেও সে কেঁদে ওঠে, চিৎকার করে।’
তিনি বলেন, ‘মিন্নি ভীষণ অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু কদিন পর মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে। তারপরে মিন্নির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলামও বলেছেন, ‘মিন্নির অসুস্থতার বিষয়টি আদালতে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্নার সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যা মামলার ধার্য তারিখ রয়েছে। তার আগেই মিন্নিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় কিংবা অন্যত্র নেয়া যাবে।’
বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নি গ্রেফতারের এক মাস ১৮ দিন পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলা ও বাবার জিম্মায় থাকার শর্তে জামিন পেয়েছেন মিন্নি।
বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে গত ২৬ জুন সকালে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার সঙ্গীরা রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। পর দিন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন করেন। পরে ১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।