রুপাকে বাঁচতে দিল না বখাটে
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী মো. রুহুল মুন্সীর মেয়ে রুকাইয়া আক্তার রুপা। সে ভাণ্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ত। স্কুলের ক্যাবিনেট নির্বাচনে প্রথম হয়েছিল রুপা।
গত শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে মৃত্যু হয় মেয়েটির। তবে কোনো অসুখ-বিসুখে নয়; অনেক ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল সে। স্বজনরা বলছে, তামিম খান (১৯) নামে এক বখাটের কারণে রুপাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তামিম ভাণ্ডারিয়া গ্রামের মঞ্জু খানের ছেলে। রুপা
রুপার বাবা রুহুল মুন্সীর অভিযোগ, তামিম খান কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে রুপাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। প্রতিবাদ করায় সে রুপার একটি ছবি ফটোশপের মাধ্যমে অশ্লীল বানিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এলাকায় ছড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে এক সহপাঠীর সঙ্গে প্রাইভেট পড়া শেষে রুপা বাড়ি ফিরছিল। পথে আবার তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় তামিম। সঙ্গে হুমকি দেয় রুপার ভুয়া অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার।
রুহুল মুন্সী বলেন, শুক্রবার রাতে রুপা কক্ষের দরজা বন্ধ করে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলে। রাত ১০টার দিকে বিষয়টি জানতে পেরে তাকে তাৎক্ষণিক নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে কোনো চিকিৎসা না দিয়েই রুপাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেখানে নেওয়ার পর রাত আড়াইটার দিকে মৃত্যু হয় রুপার।
এদিকে রুপার মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গতকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। হয়েছে বিক্ষোভ মিছিলও। গতকাল সন্ধ্যায় পিরোজপুর ডিবি পুলিশ ও ভাণ্ডারিয়া থানার যৌথ অভিযানে অভিযুক্ত তামিম গ্রেপ্তার হয়েছে।
রুপার স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জীব কুমার হাওলাদার বলেন, ‘রুপা মেধাবী ছিল। সে স্কুলের ক্যাবিনেট নির্বাচনে প্রথম হয়েছিল। বখাটের উৎপাতে তার এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
ভাণ্ডারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মামলা করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত তামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’