আত্মহত্যা নয় হত্যা করা হয়েছে প্রতীককে, দাবি বোনের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০১৯, ১২:০৯ PM , আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৯, ১২:১৩ PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীককে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বড় বোন শান্তা তাওহিদা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের আলোকে এ দাবি করেছেন।
আলোচিত ওই ঘটনার পর বিষয়টিকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দাবি করে দোষীদের শাস্তির কথা জানিয়েছিলেন প্রতীকের পরিবার ও সহপাঠীসহ অনেকে। এরপর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
তদন্ত কমিটির লুকোচুরি চলছেই, বাড়ছে বোনের অপেক্ষা
ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে শান্তা তাওহিদা বলেছেন, ‘তাইফুর প্রতীক আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতীকের একটি পা ও হাতের দুটি আঙ্গুল ভাঙ্গা অবস্থায় তাকে পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার কোন এভিডেন্স পাওয়া যায়নি! যারা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য প্রতীককে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে নিজেদের পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে চেয়েছেন তাদের বলছি---
সত্যকে কখনো ধামাচাপা দেয়া যায় না, সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই। প্রতীক এর আত্মহত্যা নিয়ে শুরুতেই পুলিশের বক্তব্য ছিল, এই মৃত্যু সন্দেহজনক। দেরীতে হলেও এবার সেই সন্দেহের সত্যতা মিলল।’
স্ট্যাটাসের সঙ্গে ফেসবুকে প্রতীকের আত্মহত্যার কিছু ছবিও শেয়ার করেছেন তিনি। এ বিষয়ে স্ট্যাটাসে তিনি বলেছেন, ‘কেন ফেসবুকে এই ছবি শেয়ার করলাম- প্রতীকের মৃত্যুর পর তার মৃত্যুকে ধামাচাপা দেবার জন্য ফেসবুকসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতীকের নামে নানা রিউমার ছড়ানো হয়েছে। একজন মৃত মানুষের নামে অপবাদ ছড়ানোর বিচার সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই করবেন। এই ছবি শেয়ার আমার একক সিদ্ধান্ত নয়, এটি আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।’
প্রতীকের ওই আত্মহত্যার পর শুধু শাবিপ্রবি নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই ঘটনার কারণ উদঘাটন না হওয়ায় এবং দোষীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল এন্ড মিনারেল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে আরও ছিলেন গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলাম।
অনার্সে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও মাস্টার্সের রেজাল্ট খারাপ হওয়া ও থিসিস করার জন্য সুপারভাইজার না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে প্রতীক আত্মহত্যা করে বলে তখন প্রচার করা হয়। বিভাগীয় শিক্ষকদের রাজনীতি এবং নম্বর কম দেওয়া তাকে আত্নহত্যায় প্ররোচিত করেছে। এমনটাই দাবি করছে নিহতের পরিবার। কিন্তু আলোচিত ওই ঘটনার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে এখনো লুকোচুরিতে তদন্ত কমিটি।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জানুয়ারি সোমবার বিকালে সিলেট নগরীর কাজলশাহ এলাকার একটি বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত থাকা শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ সেশনের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়।