২৮ জুলাই ২০১৯, ২০:০০

আখিরাতের ভয় দেখিয়ে যৌন হয়রানি করা সেই ‘বড় হুজুর’ গ্রেফতার

  © ফাইল ফটো

র‌্যাবের অভিযানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ১১ ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যায়, তিনি আখিরাতের ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করতেন। রবিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীস্থ র‌্যাব-১১ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ ফতুল্লার দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার ১১ জন ছাত্রীকে গত ৩ বছর ধরে মাদ্রাসায় তার রুমে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করে আসছে। সে ছাত্রীদেরকে কখনো আখিরাতের ভয় দেখিয়ে, হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গোনাহ হবে এবং জাহান্নামে যাবে এইরকম নানা ফতোয়া দিয়ে যৌন হয়রানী করত।

গ্রেফতার মোস্তাফিজের পিতার নাম ওয়াজেদ আলী। তার বাড়ি নেত্রকোণা জেলার সদর থানার কাওয়ালিকোনা গ্রামে। সে নিজেই ওই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে মাদ্রাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করত।

র‌্যাব জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ এর একটি দল শনিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দারুল হুদা নামক মহিলা মাদ্রাসায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষক প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে (২৯) গ্রেফতার করে।

পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিযুক্ত মো. মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার ১১ জন ছাত্রীকে গত ৩ বছর ধরে মাদ্রাসায় তার রুমে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করে আসছিল। পাশাপাশি এই অপকর্মের পর সেইসব ছাত্রীদের কেউ কেউ মুখ খোলার চেষ্টা করলে তাদের একেক জনকে একেক অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন তিনি।

এই ভাবে সে বিভিন্ন বয়সী মাদ্রাসার ছাত্রীদেরকে কখনো বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আবার কখনো জোরপূর্বক ধর্ষণ করত। সে ছাত্রীদেরকে কখনো আখিরাতের ভয় দেখিয়ে হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গোনাহ হবে এবং জাহান্নামে যাবে এইরকম নানা ফতোয়ার মাধ্যমে, তাবিজ করে পাগল করা বা পরিবারের ক্ষতি করার কথা বলে ছাত্রীদের ধর্ষণ করতো বলে স্বীকার করে।

এছাড়াও ধর্ষক মোস্তাফিজ নিজেই বিভিন্ন জাল হাদিস তৈরী করে হুজুরের সাথে সম্পর্ক করা জায়েজ আছে বলে ছাত্রীদের বলত। একটি জাল হাদিসের মাধ্যমে অভিভাবক ও সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় বলে একাধিক ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করার পর আরেকটি জাল হাদিসের মাধ্যমে তালাক হয়ে গেছে ফতোয়া দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বের করে দিত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৬ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আরও ৫ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে।