শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসালেন এএসআই!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৬ PM , আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৬ PM
নওগাঁ সদর উপজেলায় এইচএসসি পাস করা এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জামিল মোল্লা নামে এক মাদকসেবীকে ছেড়ে দিয়েছেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহাবুব।
নওগাঁ সদর থানায় বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে এ দেন-দরবারের ঘটনা ঘটে। মাদকসেবী জামিল মোল্লা সদর উপজেলা চুন্ডিপুর ইউনিয়নের চুনিয়াগাড়ী গ্রামের বেলাল মোল্লার ছেলে।
শিক্ষার্থীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুনিয়াগাড়ি গ্রামের সোনারপাড়া থেকে মাদক ব্যবসায়ী মৃত আজিজার রহমানের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আলম হোসেনকে (২৯) আটক করেন এএসআই মাহাবুব। পরে আলম হোসেনের মুঠোফোনে মাদক নেয়ার জন্য বেলাল মোল্লার ছেলে জামিল মোল্লা (২৫) কল দিলে তাকেও আটক করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর আলম হোসেনের মুঠোফোন থেকে কল দিয়ে এবার এইচএসসি পাস করা নজরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে রাশেদ মোল্লাকে ডেকে নেয়া হয়। পরে রাশেদ মোল্লাকেও আটক করেন এএসআই মাহাবুব। তিনজনকে আটক করে মোটরসাইকেলে নিয়ে আসা সম্ভব না হওয়ায় এএসআই মাহাবুব মোটরসাইকেলটি স্থানীয় আব্দুল মালেকের ছেলে শামিমের মাধ্যমে থানায় পাঠিয়ে দেন। পরে একটি সিএনজিতে করে তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।
ওই দিন রাতেই থানায় বসে দেন-দরবার। দেন-দরবার শেষে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাদকসেবী জামিল মোল্লাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
শুক্রবার সকালে শিক্ষার্থী রাশেদ মোল্লাকে ছেড়ে দেয়ার শর্তে এএসআই মাহাবুব ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। রাশেদ মোল্লার পরিবার ১০ হাজার টাকা দিলেও চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় তাকেসহ আলম হোসেনকে চালান দেয়া হয়।
রাশেদ মোল্লার বাবা নজরুল ইসলাম ও চাচা বেদারুল ইসলাম বলেন, রাশেদের কাছে কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকাল ৭টার মধ্যে আমরা থানায় আসতে পারলে রাশেদকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে থানা থেকে জানানো হয়। কিন্তু আমাদের আসতে দেরি হয়েছে। যেহেতু আসতে দেরি হয়েছে এজন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এএসআই মাহাবুব। পরে তাকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি আমরা। কিন্তু এরপরও রাশেদকে না ছেড়ে চালান দিয়েছেন এএসআই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় নকিম উদ্দিন বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে প্রায় ২৫-৫০ গ্রাম গাঁজা দেখানো হয়েছিল। যখন রাশেদ ও আলমকে আদালতে পাঠানো হয় তখন তাদের আত্মীয়-স্বজন মামলার কপি দেখতে চান। তখন তিন গ্রাম হেরোইন উদ্ধারের বিষয়টি দেখানো হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়। অথচ আমার সামনে থেকে গাঁজাসহ আলম হোসেনকে আটক করা হয় এবং আমাকে ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে। তবে ওই সময় রাশেদের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি আমরা। এএসআই মাহবুবের বিরুদ্ধে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে আইনানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিমন রায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি থানায় খোঁজ নিচ্ছি। এএসআই মাহবুব অপরাধী হলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।