রিফাত হত্যার ঘটনায় স্ত্রীকে নিয়ে গেছে পুলিশ
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে গেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। বরগুনার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে এদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ সুপার বলেছেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার মূল সাক্ষী মিন্নি। এজন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে। তবে এ মামলায় এখনো তাকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান তিনি।
মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নেওয়ার সময় বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও তার সঙ্গে গেছেন। তিনি জানান, রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক অভিযুক্তকে শনাক্ত করার জন্য পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে মিন্নিকে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে মিন্নিকে আবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রিফাত হত্যার মূল আসামি পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে নিহত নয়ন বন্ডের মা সম্প্রতি জানান, ‘রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২৬ জুন (বুধবার)। এর আগের দিন মঙ্গলবারও মিন্নি আমাদের বাসায় এসে নয়নের সঙ্গে দেখা করে। আমার ছেলে তো মারাই গেছে। আমার তো আর মিথ্যা বলার কিছু নেই। মিন্নি যে মঙ্গলবারও আমাদের বাসায় গিয়েছিল তা আমার প্রতিবেশীরাও দেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরও মিন্নি নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে নয়নের সঙ্গে দেখা করত। মোটরসাইকেলে মিন্নিকে রিফাত শরীফ কলেজে নামিয়ে দিয়ে চলে যেত। এরপর মিন্নি আমাদের বাসায় চলে আসত। আবার কলেজের ক্লাস শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে মিন্নি আমাদের বাসা থেকে বের হয়ে কলেজে যেত।’
পরে রিফাত হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। এসময় মিন্নিকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শ্বশুর আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ।
অন্যদিকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর বলেন, ‘আমার বেয়াই সন্তানের হত্যাকাণ্ডের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি একেক সময় একেক কথা বলছেন। আজ যেটা বলছেন, কালই হয়তো সেটা থেকে ফিরে আসবেন।’
অন্যদিকে নয়ন বন্ডের বাড়িতে যাওয়া প্রসঙ্গে মিন্নি দাবি করেন, তিনি নয়ন বন্ডের বাসায় কখনো যাননি। নয়নের মা কেন এসব কথা বলছেন, কার প্ররোচনায় এমনটা বলছেন- সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার আছে।