শাহীন বাঁচলেও চলে গেল আল-আমিন

  © সংগৃহীত

২৮ জুন। কিশোর শাহীনের ভ্যান যাত্রীবেশে ভাড়া নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে পাট ক্ষেতের নির্জন স্থানে শাহীনের মাথায় আঘাত করে তার ভ্যান গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায়। আঘাতের ফলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শাহীন। জ্ঞান ফিরলে তার কান্নার শব্দে স্থানীয়রা গিয়ে থানায় খবর দেয়। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর শাহীন বেঁচে যায়। তবে এবার বাঁচানো  গেল না আরেক কিশোর আল-আমিনকে।

যেন ঠিক একই কায়দা। তবে দুর্বৃত্তর আরো ভয়ঙ্কর। আল আমিন (১৪) নামে এক কিশোরকে গলা কেটে হত্যার পর তার ইজিবাইক ছিনতাই করেছে তারা। আজ বুধবার সকালে মাগুরার সদর উপজেলার কুকিলা গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আল আমিন সদর উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে শিশুরা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ওই গ্রামের শিকদারবাড়ির পাশে পাটক্ষেতের মধ্যে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের জানায়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ সকাল ৯টার দিকে নিহত কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের মামা ইলিয়াস হোসেন জানান, আল আমিন বাবার মৃত্যুর পর মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। এর পর থেকে নানা লিয়াকত আলীর বাড়িতে থাকত। ঈদের আগে আল আমিনকে নতুন একটি ইজিবাইক কিনে দেয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে সে জগদল এলাকায় যায়। কিন্তু তার পর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল।

এদিকে সকালে পাটক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ইজিবাইকের লোভেই দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে সেটি নিয়ে গেছে।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটকে পুলিশ ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে। আশা করছি শিগগিরই অপরাধীদের ধরা সম্ভব হবে।

এর আগে গত শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলী মোড়লের ছেলে কিশোর শাহীনের ভ্যান যাত্রীবেশে ভাড়া নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় নিয়ে রাস্তার দু’পাশের পাট ক্ষেতের নির্জন স্থানে শাহীনের মাথায় আঘাত করে তার ভ্যান গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

মাথায় আঘাতের ফলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শাহীন। জ্ঞান ফিরলে তার কান্নার শব্দে স্থানীয়রা গিয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে অবস্থার অবনতি হলে শনিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার চিকিৎসা শুরু হয়। সোমবার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শাহীনকে চোখ খুলেছে, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ