নয়নকে দেখতে দেড় কিলোমিটার লাইন (ভিডিও)

  © সংগৃহীত

বরগুনায় স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার লাশ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। এমনকি মরদেহ দেখতে প্রায় দেড় কিলোমিটার লাইন তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

জানা গেছে, নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ঢল নামে সাধারণ মানুষের। সেই ঢল সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকেও। পরে লাইনে দাঁড় করে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখার সুযোগ করে দেয় পুলিশ। এ সময় নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখতে আসা সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

গণমাধ্যমে নয়ন বন্ডের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গ ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেয় উৎসুক সাধারণ মানুষ। পরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে সকাল ৭টার দিকে নয়ন বন্ডের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে পুলিশ। সেই থেকে নারী-পুরুষসহ কয়েক হাজার মানুষ নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখেছে বলে জানিয়েছে মর্গ প্রাঙ্গণ দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা।

আজ সকালে নয়নের প্রাণহানির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি চাপাতি, একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নয়ন বন্ডের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভোর রাত ৪টার দিকে বরগুনা সদর থানার পুলিশ নয়ন বন্ডকে গ্রেপ্তারের জন্য ওই গ্রামে যায়। ওই গ্রামের খলিল মাস্টারের বাড়ির সামনে গেলে নয়ন বন্ড ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে।

এতে ঘটনাস্থলে নয়ন নিহত হন। হামলায় বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান মিয়াসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। এঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সোমবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া, নাজমুল হাসান, সাগর ও সাইমুন নামে অপর তিনজন বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন। এদিকে মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় গ্রেফতার হলেও তিনি বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌঁছায়নি।

গত ২৬ জুল (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে সন্ত্রাসীরা স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রিফাত শরীফকে। পরে বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পড়ুন:লাশ দাফনে কেউ আসছে না, মানবিক বিপর্যয়ে স্বামীহারা নয়নের মা

পড়ুন: ঢাবির ক্যান্টিনে ৪৫ কেজি পচা মাছ-মাংস, জরিমানা ৫০ হাজার টাকা


সর্বশেষ সংবাদ