শাহীনের পাশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় ছিনতাইকারীদের হামলায় গুরুতর আহত কিশোর শাহীনের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে থাকবে সে। এদিকে হামলার শিকার হওয়ার পর থেকেই শাহীনের পাশে দাড়িয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা নানাভাবে শাহীনকে সহযোগিতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আগে থেকেই তার চিকিৎসায় তৎপর রয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম ্আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। তিনি লিখেছে, ‘#শাহীনের পাশে আছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। গত রাতে (শনিবার) বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে শাহিনের ও তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছে।
বরাবরের মত মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে গভীররাতে সেখানে ছুটে গিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা এবং তার পরিবারকে কথা দিয়েছে, যেকোন সমস্যায় আমরা আপনাদের পাশে আছি।
#আমরা চাই না শাহীন আর ভ্যান চালিয়ে জীবনযাপন করুন।
#তার স্কুলে পড়াশোনা করার ব্যাপারে ও সুন্দর জীবন গঠনে পাশে থাকবে ছাত্র অধিকার পরিষদ।’
এদিকে শনিবার (২৯ জুন) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সমালোচনা করে, উহ-আহ দুঃখ প্রকাশ করে আপনারা তখন হয়তো ঘুমিয়ে আছেন। টিভিতে সংবাদ দেখেছেন, টকশো দেখেছেন কিংবা হিন্দি সিরিয়াল দেখে ক্লান্ত আপনি হয়তো ভালো মন্দ খেয়ে শান্তির ঘুম দিয়েছেন। সারাদিনের খাটাখাটুনি শেষে শাহীনের মাও হাসপাতালের বারান্দায় গা এলিয়ে দিয়েছে।
রাত আড়াইটায় যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে গেলাম তখন জেগে আছে অগোছালো জামা কাপড় পড়া কিছু তরুণ। এরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী, দেবাশীষ আইচ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের জিএস মেহেদী হাসান শান্তসহ ২০ জন।
ছাত্রলীগকে যারা কথায় কথায় গালিগালাজ করে জাতে উঠার চেষ্টা করেন তারা একটু জেনে রাখেন, এই শাহীনকে যশোর থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন ছাত্রলীগেরই কর্মীরাই। কোনো জাতি উদ্ধারকারী সমালোচক এগিয়ে আসেনি। শাহীন কিন্তু ছাত্রলীগের কারো আত্মীয়ও নয়। ঢাকা মেডিকেলে আনার পর শাহীনের জন্য এবি পজেটিভ রক্ত জোগাড় করা করেছে এই জয়দেব নন্দীরাই।
রাতে যখন সোয়া ১২টার সময় জয়দেব নন্দী আমাকে ফোন করে জানায়, তার অপারেশন করতে হবে এবং এরপর আইসিউ লাগবে। সাথে সাথেই আমি, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার এস এম খুরশিদ আলম ও আওয়ামী লীগ সুভাস সিংহ রায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে অপারেশন ও আইসিইউ’র ব্যবস্থা করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও তাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছিলেন।
অপারেশন শেষে রাত তিনটা থেকে শাহীনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না। অপারেশন চলার সময় যখন শাহীনের মা ও চাচার সাথে কথা বলি, ফেল ফেল চোখে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা শুধু একটি কথাই বলেছেন, আমরা আর নিজেদেরকে অসহায় মনে করছি না। আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। আর্থিক সহযোগিতাসহ সব রকমের সাপোর্টই দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার সাতক্ষীরায় ছিনতাইকারীরা রিকশাচালক শাহীনের রিকশা ছিনতাই করার সময় তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তার বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামে।