২৮ জুন ২০১৯, ২২:৪৬

এবার বেপরোয়া ট্রাক বিচ্ছিন্ন করে দিল কলেজছাত্রের হাত

  © সংগৃহীত

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় বাসে থাকা এক শিক্ষার্থীর বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালীতে। হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া শিক্ষার্থীর নাম ফিরোজ আহমেদ (২৪)।

ফিরোজ রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নামোগ্রাম গ্রামে। ফিরোজের বাবার নাম মাহফুজুর রহমান।

হাত বিচ্ছিন্ন হবার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর একদফা অস্ত্রোপচার করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হলেও তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

বর্তমানে হাসপাতালের ৩১নং ওয়ার্ডে ফিরোজ আহমেদকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। তার শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। ফিরোজ বগুড়া থেকে রাজশাহী আসছিলেন। বলে কাটাখালী থানার ওসি নিবারচন্দ্র বর্মণ জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বগুড়া থেকে রাজশাহীগামী মোহাম্মদ ট্রাভেলস নামে একটি বাস নগরীর কাটাখালী পৌরসভার সামনে পৌঁছালে নগরীর দিক থেকে বানেশ্বরমুখী একটি দ্রুতগামী বালুবাহী ট্রাক বাসটির ডানদিকে সজোরে ধাক্কা দেয়।এ সময় বাসের যাত্রী ফিরোজ কবীর বাম হাত জানালা খুলে বের করে ছিলেন। ট্রাকের ধাক্কায় মুহূর্তের মধ্যে ফিরোজ আহমেদের বাম হাত শরীর থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাসড়কে ছিটকে পড়ে।

বাস ও ট্রাক দ্রুত পালিয়ে গেলে বিচ্ছিন্ন হাতটি মহাসড়কে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে কাটাখালী থানায় ফোন করেন তারা। পুলিশ ফিরোজ আহমেদের বিচ্ছিন্ন হওয়া হাতটি আধাঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

আক্রান্ত বাসটিও দ্রুত নগরীর সিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছায়। পরে অন্য যাত্রীরা প্রায় অচেতন ফিরোজ আহমেদকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে ফিরোজ আহমেদের কাটা হাতের রক্তক্ষরণ বন্ধে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।এখনও ফিরোজ আহমেদের জ্ঞান ফেরেনি বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। ফিরোজ আহমেদের শারীরিক পরিস্থিতি এখনও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম।

তিনি জানান, ফিরোজ আহমেদকে রক্ত দেয়া হচ্ছে। তার পরিবারকে ফোন করে খবর দেয়া হয়েছে। রাত ৯টা পর্যন্ত ফিরোজ কবীরের জ্ঞান ফেরেনি।

এদিকে আরএমপির কাটাখালী থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ঘাতক ট্রাকটি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বাসটিকে সিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে আটক করা হলেও ট্রাকটি আটক করা যায়নি। ট্রাকটিকে শনাক্তে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ব্যাপারে কাটাখালী থানায় আপাতত একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

উল্লেখ্য গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন মহাখালী থেকে সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের পাশের রাস্তায় পৌঁছালে পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস সেটিকে ওভারটেক করে। সে সময় রাজীবের ডান হাতটি বাইরের দিকে সামান্য বেরিয়েছিল। স্বজন পরিবহনের বাসটি বিআরটিসি বাসের গা ঘেঁষে পেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজীবের হাতটি কাটা পড়ে। ঘটনার পর দ্রুত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন হাতটি রাজীবের শরীরে আর জোড়া লাগাতে পারেননি।