মিন্নিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিয়ে করেছিল নয়ন!
বরগুনায় রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সারাদেশে চলছে প্রতিবাদ। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার কথা বলছেন সবাই। এরমধ্যে তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সঙ্গে ঘাতক নয়ন বন্ডের পূর্বে বিয়ে হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে। পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়াও বিয়ে হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে মিন্নি পূর্বের বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলছেন, নয়ন ও তার সঙ্গীরা অস্ত্র ও আমার ভাই-বোনের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে একটি কাগজে সই নেয়। পরে তা দিয়ে কী করেছে তা আমার জানা নাই।
নয়ন বন্ডের ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ের প্রথম স্বাক্ষী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় আসামি বাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজি। বলা হচ্ছে, গত বছরের ১৫ অক্টোবর আছরের নামাজের পর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের দেনমোহর হয়েছিল ৫ লাখ টাকা। তবে দেনমোহরের কোনো নগদ পরিশোধ ছিল না।
কাজী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিয়ে করার জন্য নয়ন ও মিন্নিসহ ১৫ থেকে ২০ জন লোক আসে আমার অফিসে। এসময় নয়ন ও মিন্নি তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার প্রমাণস্বরূপ এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে আসে। এরপর আমি মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা জানতে চাইলে তারা বলে, মেয়ের বাবা আসবে না, আপনি মেয়ের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর মিন্নির মা পরিচয়ে একজন আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
তিনি (ফোনের অপরপ্রান্তের মহিলা) আমাকে বলেন, বিয়ের বিষয়টি আমরাতো জানি। মিন্নির বাবা বিয়েটা এখন মানবে না। আপনি বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের কিছুদিন পর ঠিকই মেনে নেবেন। এরপর আমি পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে নয়ন ও মিন্নির বিয়ে সম্পন্ন করি। এ বিয়ের উকিল ছিলেন শাওন নামের একজন। শাওন ডিকেপি রোডের মো. জালাল আহমেদের ছেলে।
এদিকে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বলেন, নয়ন আমাকে খুব উত্ত্যক্ত করতো। আমাকে হুমকি দিত এবং অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখাত। আমার ভাই কলেজ রোড এলাকার একটি স্কুলে পড়ে। নয়ন আমার স্কুল পড়ুয়া ভাই এবং বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার বাবাকেও বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিত। একদিন অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে একটি বাসায় নিয়ে যায় নয়ন। পরে সেখানে বসে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয় সে। তবে সেই স্বাক্ষর দিয়ে নয়ন কিছু করেছে কি-না আমি জানি না।
তিনি আরও বলেন, যারা আমার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা মন্তব্য করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই।
মিন্নি বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে একমাত্র রিফাত শরীফের সঙ্গে। এছাড়া আমার আর কখনো কারও সঙ্গে বিয়ে হয়নি। যেহেতু বিয়েই হয়নি, ডিভোর্স হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। রিফাতই আমার স্বামী এবং এটাই সত্য। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই দাবি করি, যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
পড়ুন: মাশরাফির বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস: সেই অধ্যাপককে রাঙামাটি বদলি!
রিফাতের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যখন আমার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি তখন একটি মানুষও এগিয়ে আসেনি। কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি। আমি অস্ত্রের সামনে গিয়ে আমার স্বামীকে রক্ষা করতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমি পারিনি।
পড়ুন: ফেসবুক গ্রুপ ০০৭ এর পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয় রিফাতকে