১৭ জুন ২০১৯, ১১:৩৮

সোনাগাজী থানা পুলিশের হেফাজতে ওসি মোয়াজ্জেম

  © ফাইল ফটো

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার সকালে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।আইসিটি আইনের মামলায় রোববার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন বলেন, একজন সাব ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে সোনাগাজী থানা পুলিশের একটি টিম ঢাকায় অবস্থান করছে। তাদের কাছেই মোয়াজ্জেম হোসেনকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারাই তাকে আদালতে নিয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

এদিকে ওসি মোয়াজ্জেমকে আজ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে। ডিএমপি রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার জানান, ‘ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আজই আদালতে হাজির করা হবে।’

ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে রোববার রাজধানীর শাহবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়। 

নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও দেন তিনি।

ভিডিও করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সুমন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও মামলার নথি পর্যালোচনা করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এরপরও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আত্মসমর্পণও করেননি।

পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী, গত ৮ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন। গত ক’দিন থেকে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ফেনী ও রংপুর পুলিশের ঠেলাঠেলি চলছিল। ঈদের আগে সেখান থেকে নিরুদ্দেশ হন ওসি মোয়াজ্জেম।

এর আগে, গত ৬ এপ্রিল এইচএসসি সমমানের আলিম আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান।