নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নুসরাত হত্যা মামলা
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার ধার্য তারিখে ফেনীর আমলি আদালতের বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন মামলাটির বদলির আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, এ সময় ওই মামলায় আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ জনসহ গ্রেপ্তার ২১ আসামির সবাই উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলার বাদী নুসরাতের ভাই আবদুল্লাহ আল নোমানও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বুধবার এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জন আসামির মধ্যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ১৬ জনের মধ্যে মামলার এজাহারনামীয় আটজন এবং এজাহার-বহির্ভূত আটজন আসামি রয়েছে।
কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী জানান, আগামী ১০ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে।
এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের মধ্যে ১২ জন আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ১৬৪ ধারায় সাতজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন এবং ১৬১ ধারায় ৬৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। বোরকা পরিহিত কয়েকজন কৌশলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ রাফি। এর আগে ২৭ মার্চ রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত রাফি হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২২ জনের মধ্যে সিরাজ উদ্দৌলাসহ ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।