ফরিদপুরে হামলায় জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল?
ফরিদপুরে হামলার মুখে ব্যান্ড তারকা জেমসের একটি কনসার্ট পণ্ড হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষ উদ্যাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের শেষ দিনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি শুধু নিবন্ধিত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল। অনিবন্ধিত কয়েক হাজার বহিরাগত দর্শক সংগীতশিল্পী জেমসের কথা শুনে চলে আসেন। ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় তারা পাশের মুজিব সড়কে অবস্থান নেন। পরে আয়োজক কমিটির পক্ষে বাইরে দুটি প্রজেক্টর লাগিয়ে দেওয়া হয়। তবে এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে বহিরাগতরা দেয়াল বেয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেওয়ায় স্কুল প্রাঙ্গণের দর্শক ও মঞ্চের দিকে একের পর এক ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বাধা দিলে তাঁরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাদের ছোড়া ইটপাটকেলে স্কুল প্রাঙ্গণের ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় রাত ১০টার একটু আগে নিরাপত্তা উপপরিষদের সদস্য ও ফরিদপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বেনজীর আহমেদ তাবরীজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেন।
আনিসুর রহমান সজল নামে এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জন নিবন্ধিত সদস্য ভেতরে উৎসব করছিলাম। কিন্তু জেমস আসার খবরে বাইরে ২০-২৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়। হঠাৎ বৃষ্টির মতো বড় বড় ইট এসে আমাদের ওপর পড়তে থাকে। সাউন্ড সিস্টেমের মনিটর ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
পুনর্মিলনী উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরেই আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। আমাদের অনেক ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও প্রবীণ সদস্যরা আহত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
জেমসের মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর বলেন, ‘এ আয়োজনে অংশ নিতে সাড়ে সাতটায় ফরিদপুর পৌঁছাই। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পরেই জানতে পারি সেখানে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। আমরা তখন গেস্ট হাউসেই ছিলাম। রাত সাড়ে ১০টায় বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করলে অনুষ্ঠান বাতিলের কথা আমাদের জানানো হয়। এরপর ঢাকায় চলে আসি।’
বিষয়টি প্রসঙ্গে জেমস বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতা।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, জেমস আসার খবর শুনে স্কুলের সামনে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে যান। এত লোককে স্কুলের ভেতরের প্রাঙ্গণে জায়গা দেওয়া অসম্ভব ছিল। বহিরাগতদের ঢুকতে না দেওয়ায় হালকা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শেষ পর্যন্ত পুরো পরিবেশনা বাতিল করা হয়।