চুরির অভিযোগে ভ্যানচালককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় চুরির অভিযোগে ওমর ফারুক হোসেন (৩৯) নামের এক ভ্যানচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। তবে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক বাগমারা থানা পুলিশ। মৃত ওমর ফারুক হোসেন উপজেলার চানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার ভবানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডের পাশে এক ব্যক্তির অটোরিকশা থেকে ব্যাটারি চুরির চেষ্টা করেন ওমর ফারুক। পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধাওয়া দিয়ে ধরে কিল-ঘুসি মারে এবং পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভুঞার দপ্তরে সোপর্দ করে।
বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সে সময় ওমর ফারুকের কাছে ১০ গ্রাম গাঁজা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ১০০ টাকা জরিমানা ও ৭ দিনের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরদিন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার তার মৃত্যু হয়।
ওমর ফারুকের বাবা মোসলেম সরদার অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে সিএনজি স্ট্যান্ডে প্রস্রাব করতে গিয়েছিল, সেখান থেকে ধরে নিয়ে তার হাতে-পায়ে পেরেক মেরে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। সঠিক চিকিৎসার অভাবেই তার মৃত্যু হয়েছে।
তবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. শারমিন সোবহান কাবেরি জানান, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে নিহতের শরীরে পেরেক মারার মতো কোনো গভীর ক্ষত বা মলদ্বারে মরিচের গুঁড়া দেওয়ার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, ওমর ফারুকের কিডনি জটিলতা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগ ছিল। শরীরে কিছু হালকা ছিলে যাওয়ার দাগ থাকলেও সেগুলো পুরোনো। ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম জানান, ১৭ ডিসেম্বর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।