২৫ মে ২০১৯, ২০:২৭

সনদ জাল করেও অধ্যক্ষ পদে বহাল জামায়াত নেতা

  © সংগৃহীত

একজন কলেজ অধ্যক্ষের সনদ যদি জাল হয় তখন সেই কলেজের সামগ্রিক কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। ভাবছেন কলেজের অধ্যক্ষ তাও আবার জাল সনদ দিয়ে? শুনতে অসম্ভব মনে হলেও এমনটা করে দেখিয়েছেন আব্দুল আজিজ।

তিনি বর্তমানে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার পীরগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ।সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার প্রমাণ পেয়ে এমপিও ও বেতন স্থগিত করা হয়েছে আব্দুল আজিজের। প্রভাব খাটিয়ে কলেজের অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিবও হয়েছেন এ জামায়াত নেতা।

জানা গেছে, রাজশাহী কলেজ থেকে ২০০৮ সালে সমাজবিজ্ঞানে অনার্স ও ২০০৯ সালে মাস্টার্স পাস করেন অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ। একই সময় তিনি বেসরকারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিএসসি পাসের জাল সনদ যোগাড় করেন। তা দেখিয়ে চাকরি নেন এই কলেজে। শুধু তাই নয়, একইভাবে জাল সনদ তৈরি করে তার ভাই ও জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলামকেও কলেজের লাইব্রেরিয়ান পদে চাকরি দেন।

বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ। তিনি সনদ জালিয়াতির বিষয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কাছে জানতে চান। জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে সিআইডিকে জানানো হয়, আব্দুল আজিজ তাদের শিক্ষার্থী নন। তার জমা দেওয়া সনদটি জাল।

সার্বিক বিষয় তদন্তের পর গত ৬ জানুয়ারি কলেজটির দুই শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ানের এমপিও এবং বেতন স্থগিত করা হয়। তারা হলেন- অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ, বাংলা বিষয়ের প্রভাষক আনিসুর রহমান ও গ্রন্থাগারিক সাইফুল ইসলাম। তাদের মধ্যে আনিসুর রহমান দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এমপিওভুক্ত হয়ে চাকরি করছিলেন। অন্যদের সনদপত্র জাল। তারা তিনজনই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে আনিসুর রহমান গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ বলেন, তার এমপিও বাতিল হয়নি। সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। সিআইডিকে দেওয়া এশিয়ান ইউনিভার্সিটির চিঠির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। ওই রিটের ফল না আসা পর্যন্ত তিনি অবৈধ নন বলে জানান। রিট বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আব্দুল আজিজ।

বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের সভাপতি জাকিউল ইসলাম বলেন, কারিগরি বোর্ড এমপিও স্থগিত করলেও অধ্যক্ষ পদ থেকে আব্দুল আজিজকে কলেজ থেকে এখনও অব্যাহতি দেয়নি। শিক্ষা বোর্ড তাকে অব্যাহতি দিলেই তার পদটি বাতিল হবে। তিনি আরও বলেন, জালিয়াতির অভিযোগের পর তার বেতন স্থগিত করে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এ জন্য তার বেতন স্থগিত করা হয়েছে। এখন বোর্ড অব্যাহতি দিলে আমরাও তা বাস্তবায়ন করব।