প্রিন্সিপালকে ছাত্রলীগ নেতার প্রশ্ন— ‘তুই জানিস না কেন’

ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়েজুল্লাহ
ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়েজুল্লাহ

সাতক্ষীরার জেলার দেবহাটা সরকারি খান বাহাদুর আহছানউল্লা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়েজুল্লাহর বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে বেতনের বিষয়ে জানতে চায় ওই ছাত্রলীগ নেতা। কিন্তু তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ভাইস-প্রিন্সিপালের কাছে জানতে চাওয়ার পরামর্শ দিলে ওই নেতা প্রধান শিক্ষককে ‘তুই জানিস না কেন’ বলে প্রশ্ন করে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কলেজ চত্বরে ছাত্রলীগ নেতার অশোভন আচরণের প্রতিবাদে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কলেজ ছাত্রলীগ নেতার অশোভন আচরণের প্রতিবাদ এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এছাড়া ওই নেতার বিরুদ্ধে কলেজ ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, শিক্ষকদের প্রতি অশোভন আচরণ, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত এ মানববন্ধন থেকে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি ঘোষণারও দাবি জানান কলেজের শিক্ষকরা।

কলেজে মানববন্ধন

সরকারি খান বাহাদুর আহছানউল্লা কলেজের অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম জানান, ফয়েজউল্লাহ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে আমাদেরই ছাত্র। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ ফয়েজউল্লাহ আমার রুমে এসে বলে, ‘আংকেল আপনারা স্টুডেন্টদের কাছ থেকে ৮০ টাকা করে নিচ্ছেন কেন?’ তখন আমি বলি, এটা তোমাদের ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার বলতে পারবেন। তার কাছে জিজ্ঞেস করো। আমি একটু অন্য কাজে ব্যস্ত। তখন সে বলে, ‘এই তুই জানিস না কেন?’ তখন আমি তাকে আমার রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলি। ঘটনার সময় আরও দুজন শিক্ষক আমার কক্ষে ছিলেন।

কলেজ অধ্যক্ষ আরো বলেন, আমার ৩৪ বছরের শিক্ষাকতার জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার পর তার বলা কথাগুলো শিক্ষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষকরা প্রতিবাদ শুরু করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মানববন্ধন করে প্রতিবাদ ও কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হককেও জানানো হবে।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফয়েজউল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক খাতার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ১০০-১৫০ টাকা করে নেয়ার ঘটনাটি শিক্ষার্থীরা আমাকে জানানোর পর বিষয়টি জানতে আমি অধ্যক্ষের রুমে যাই। এসব কথা জিজ্ঞেস করায় সেখানে আমাকে মারপিট করতে উদ্যত হন। এছাড়া স্যার আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিচ্ছেন সেটা সত্য নয়।

মানববন্ধনে কলেজ অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম, শিক্ষক গোলাম জাকারিয়া, শরিফুল ইসলাম, মনিরুজ্জামানসহ সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী অংশ নিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ