পিএসসির চাকরি পরীক্ষায় সাজেশন দেয়ার নামে প্রতারণা, মূলহোতা গ্রেফতার
চাকরিপ্রার্থীদের হতাশার সুযোগ নিয়ে পিএসসির নন-ক্যাডার নিয়োগ পরীক্ষায় ‘৯০ শতাংশ কমন সাজেশন’ দেয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র। অবশেষে সেই চক্রের মূলহোতা মতিউর রহমানকে জামালপুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিআইডি হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া সেন্টার এক প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা যায়, প্রতারক মতিউর রহমানকে সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এর একটি দল জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার কাজলা ইউনিয়নের মন্ডলবাড়ি নোয়ার পাড়ার বাসিন্দা। তার পিতার নাম মো. নাসির উদ্দিন ও মায়ের নাম রেহেনা বেগম।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, মতিউর রহমান দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিএসসি পরীক্ষার সাজেশন নামে ‘ATEO এর জন্য সিক্রেট শীট’, ‘৮০-৯০শতাংশ কমন’, ‘চূড়ান্ত Secret সাজেশন’ ইত্যাদি শিরোনামে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিত। এতে বলা হতো, ‘মাত্র ৫৫০টি MCQ’র উত্তরসহ সাজেশন শীট, ক্যাশ অন ডেলিভারিতে ৩৯০ টাকা, অগ্রীম ৯০ টাকা, পিডিএফ নিতে অগ্রীম ২০০ টাকা। পেমেন্টের ১ মিনিটের মধ্যেই মেসেঞ্জার/হোয়াটসঅ্যাপ/ইমেইলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’
এভাবে তিনি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ/নগদ/রকেট) ব্যবহার করে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। এতে যেমন নিরীহ চাকরিপ্রার্থীরা প্রতারিত হচ্ছিল, তেমনি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিল।
ঘটনাটি পিএসসির নজরে এলে গত ১ সেপ্টেম্বর কমিশনের সহকারী পক্ষ থেকে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের মূলহোতাকে শনাক্ত করে জামালপুর জেলা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করে সিআইডি। গ্রেফতারকালে প্রতারণায় ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পিএসসির পক্ষ থেকে শেরে বাংলা নগর থানায় (ডিএমপি) একটি মামলা (নম্বর–০১, তারিখ–০১/০৯/২০২৫) দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০ ও ৫০০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতকে আদালতে উপস্থাপন করে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।