২০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৪১

নুসরাত হত্যায় আ. লীগ নেতার ৫ দিনের রিমান্ড

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ড মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার সন্ধ্যায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, রুহুল আমিনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্ক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বিকেল পুলিশ রুহুল আমিনকে আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে রুহুলকে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে রুহুল আমিনসহ এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এলাকারবাসীর আরও অভিযোগ, শ্লীলতাহানির মামলায় গত ২৭ মার্চ যখন অধ্যক্ষ কারাগারে যান, তখন রুহুল আমিনের লোকজন প্রতিবাদকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ২৮ ও ৩০ মার্চ তাঁর লোকজন অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।

জানা যায়, এই মামলার অন্যতম দুই আসামি নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতে রুহুল আমিনের নাম উঠে আসে। শাহাদাত জবানবন্দিতে জানায়, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সে (শাহাদাত) দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যায়। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানায় সে। তখন রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’

মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, সিরাজ উদ দৌলা কিছু সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদের নিয়ে সব ধরণের অপকর্ম করে। তাই তাকে  কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। নুসরাতের সাথে ঘটে যাওয়া ২৭ তারিখের ঘটনার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শুরু করি। কিন্তু পরবর্তীতে মাদ্রাসার গভর্নিং বোর্ডের সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি রুহুল আমীন আমাদেরকে বিষয়টি নিয়ে কথা না বলতে পরোক্ষভাবে হুমকি দেন। আর আমাদেরও ধারণা ছিলো যেহেতু নুসরাতের গায়ে হাত দিয়েছে তাই অল্প কিছু দিন পরেই সিরাজ উদ দৌলা ছাড়া পেয়ে যাবে। তখন আমাদের চাকরি থাকবে না।

গত ৬ এপ্রিল কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা নুসরাত জাহান রাফিকে। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ওসি, সাংবাদিক থেকে করে প্রভাবশালীরা এটাকে আত্মহত্যা বলে চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১এপ্রিল বুধবার মারা যায় নুসরাত।