২২ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৫৯

সোর্সের মাধ্যমে মাদক পাচার করেন থানার এসআই, ফেনসিডিলসহ আটক ৩

মাদক পাচার ঘটনায় এসআই কামালের সোর্সদের আটক করেন ছাত্র-জনতা  © সংগৃহীত

চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় থানা পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত টানা অভিযানে স্থানীয় ছাত্র-জনতা এসআই কামালের ৩ জন সোর্সকে ফেনসিডিলসহ আটক করে সেনাবাহিনীর কাছে সোর্পদ করে।

আটক তিনজন হলো- রমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন ও তাজরুল ইসলাম। তারা তিনজনই পুলিশের সোর্স বলে স্বীকার করেন। তাদের মধ্যে রমিজ উদ্দিন ও নাজিম উদ্দিনের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলায়। তাজরুলের বাড়ি কুমিল্লায় বলে জানা গেছে।

রমিজ উদ্দিন স্বীকার করেন তারা তিনজন পুলিশের সোর্স। তিনি বলেন, এসআই কামাল তাদের জব্দকৃত ফেনসিডিলগুলো দিয়েছেন। এসব ফেনসিডিল পাশের পার্বত্য লামা উপজেলার আজিজ নগরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন এসআই কামাল বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানায়, এসআই কামাল তাদের পিছনের একটি প্রাইভেট কারে ছিলেন। ওই গাড়ীর পেছনে ইয়াবা ছিল বলে দাবি করেন তারা। সামনের গাড়ি আটকের সঙ্গে সঙ্গে তিনি পেছনের গাড়ি থেকে পালিয়ে যান বলে জানান তার সোর্সরা।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র-জনতা জানান, লোহাগড়ার থানা পুলিশের সদস্যরা মাদকদ্রব্য উদ্ধার করলেও তা আদালতে জমা না দিয়ে পাচার করেন এমন অভিযোগ তারা আগেও শুনেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্বস্ত সূত্রে তারা জানতে পারেন, এসআই কামাল হোসেন তার ব্যক্তিগত সোর্সদের ব্যবহার করে লোহাগাড়া থানা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক কক্সবাজারে পাচার করবেন। এরপর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার শিক্ষার্থীদের বিষয়টি যাচাই করতে অনুরোধ জানানো হয়। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘণ্টা চুনতি বাজার এলাকায় অবস্থান করে ছাত্ররা এসআই কামালের সোর্সদের মাদকসহ (ফেনসিডিল) আটক করতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুন: থানা ব্যারাকেই নারী পুলিশকে ৬ মাস ধরে ধর্ষণ পুরুষ পুলিশের, ভিডিও ধারণ

এদিকে ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, আটক রমিজ ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তি স্বীকার করছেন, এসআই কামাল হোসেন তাদের হাতে মাদক তুলে দেন এবং পাচারে নির্দেশ দেন।

পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম উপস্থিত হয়ে আটক ব্যক্তিদের মাদকসহ হেফাজতে নেয়।

এ বিষয়ে লোহাগড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। তবে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার ডিউটিতে থাকায় আমি বর্তমানে কর্মস্থলে নেই। তারপরও আমি প্রাথমিকভাবে ওসিকে বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দিয়েছি।’

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।

তবে লোহাগড়া থানার ওসি (তদন্ত) রবিউল আলম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। অফিস খোলার দিন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।