১৩ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১২

নুসরাতকে নিয়ে অধ্যক্ষের আপত্তিকর মন্তব্য, মানববন্ধনে বাঁধা

অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগম

ফেনীর নুসরাত জাহান রাফিকে নিয়ে এবার আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে খুদ ফেনীর সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগমের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করতে চাইলেও অধ্যক্ষ অনুমতি দেননি বলে জানা যায়।

শনিবার ওই কলেজের ছাত্রী তাহমিনা রুমি ও স্নিগ্ধা জাহান রিতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই অভিযোগ করেন। তারা লিখেছেন, ‘নুসরাত হত্যার বিচার দাবিতে ফেনী সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের ব্যানারে আমরা একটা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলাম। তাই শনিবার সকাল ৯টায় অনুমতির জন্য আমরা কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগমের কাছে গিয়েছিলাম। আমাদের কয়েকজন ম্যাডামের রুমে যাই। তারপর ম্যাডাম যা বললেন তা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না আমরা কেউই।’

ওই দুই ছাত্রী আরও লিখেছেন, ‘ম্যাডাম আমাদের বললেন নুসরাতকে তার স্যার বলেছিল পরীক্ষার আগে প্রশ্ন দেবে, তাই নুসরাত নিজ ইচ্ছায় স্যারের কাছে গিয়েছিল। অথচ এতদিন ধরে আমরা জেনে আসছি কলেজের পিয়নকে দিয়ে নুসরাতকে ডাকা হয়েছে। তবে কি আমরা এতদিন ভুল জানতাম? আমাদের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছে মিডিয়া? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছা হয় আমার। কে দেবে এসব প্রশ্নের উওর? কোথায় পাব এসবের উওর? আমাদের ম্যাডাম আরও বলেছেন, অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে ঘটতেছে, কারণ বর্তমান মেয়েরা অনেক লোভী। নুসরাত মেয়েটা ধোয়া তুলসী পাতা না। মেয়েটার সঙ্গে যেটা হয়েছে তার জন্য মেয়েটাই দায়ী। এটার জন্য মানববন্ধন করতে আমি কখনও অনুমতি দেব না। তোমরা ক্লাসে যাও।’

এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

এর আগে নুসরাত জাহান রাফিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে মামুন বিল্লাহ নামের ওই শিক্ষার্থীকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ইতিমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মামুন স্বীকার করেছেন, তিনি চাকরি হারিয়েছেন। তবে তিনি আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিহত নুসরাতের বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে তা ফেসবুক পেজে শেয়ার করে। সেখানে মামুন বিল্লাহ ফেসবুক আইডি থেকে মন্তব্য করা হয়, ‘মেয়েটা কিন্তু জোস ছিল, মালটা ধর্ষণ করার মতোই ছিল।’

গত ৬ এপ্রিল ফেনী জেলার সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে  গিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এর আগে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন নুসরাত। মাদ্রাসা শিক্ষকের লালসার আগুনে পুড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ এপ্রিল বুধবার মারা যান তিনি। ঘটনায় অভিযুক্তদের  ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য অপরাধীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। 

আরো দেখুন: নুসরাতকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য, চাকরি হারান রাবি শিক্ষার্থী