‘গাঁজাখোর’ বলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে খুন, মূল আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে
পটুয়াখালীর বাউফলে ‘গাঁজাখোর’ বলে মন্তব্য করায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. ফাহিম বয়াতিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার এক মাস পার হলেও মামলার প্রধান আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসন অদৃশ্য কারণে তাদের ধরছে না।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলুফকির বাজার এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নিহতের সহপাঠী, স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
নিহত ফাহিম বয়াতি নওমালা ইউনিয়নের ভাঙ্গা এলাকার মো. জাকির বয়াতির ছেলে। তিনি নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, মাদক কারবারি শাকিল মীরকে ‘গাঁজাখোর’ বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাকিল, শানু ও সোহাগ পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফাহিমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ফাহিমের বাবা জাকির বয়াতিকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন।
স্বজনদের অভিযোগ, বরিশালের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় জাকির বয়াতির নামেই পাল্টা মামলা করা হয়েছে আসামিদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে। অথচ হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শাকিল মীর ও সোহাগ মীর এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নিহতের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলীম ব্যর্থতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা আসামিদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই তাদের ধরতে সক্ষম হবো।’
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই বিকেলে বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলুফকির বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ফাহিমকে গুরুতর জখম করা হয়। পায়ের রগ কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় তার বাবা জাকির হোসেনকেও কুপিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। এলাকাবাসী এক হামলাকারীকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করলেও, মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার মূল আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।