আগুনে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের শরীরের ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫৮ PM , আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০২:২৪ PM
ফেনীর সেনাগাজীতে শনিবার পরীক্ষাকেন্দ্রে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়া মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানের শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক। কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা করে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, ‘তার শরীরের ৮০ শতাংশের মত বার্ন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে, একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।’ খবর: বিবিসি বাংলা।
উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে কিনা - সে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখনো সেবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত হলে তাকে বিদেশে নেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
যেভাবে গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ঘটে: শনিবার সকালে ফেনীর পৌর শহরের সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সকালে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে প্রবেশের আগে নুসরাতকে কয়েকজন ‘মুখোশ পরা’ মেয়ে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। তারা নুসরাতকে জানায় যে, তার এক বান্ধবীকে ছাদে পেটানো হচ্ছে।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান বলেছিলেন, নুসরাত কয়েকদিন আগে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছিল। সেই ঘটনার জেরে ওই অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা তার বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।
চিকিৎসকের সামনে পুলিশের জবানবন্দিতে নুসরাতও জানিয়েছেন যে, পরীক্ষার কেন্দ্রের বাইরে তাকে কয়েকটি মুখোশ পরা মেয়ে ডেকে নিয়ে যায় এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলাটি তুলে নিতে বলে। নুসরাত তাতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়েরাই নুসরাতকে মিথ্যা বলে, পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। গত ২৭শে মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা তার বোনকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে এমন অভিযোগে পুলিশের কাছে মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
পরে পুলিশ ওই মামলার জেরে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে এবং আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়। এই ঘটনার পর মাদ্রাসায় ওই শিক্ষকের পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে আন্দোলন করতে শুরু করে।