সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
সিলেটের জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বিক্ষোভের ঘটনায় ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে সিলেট ও জাফলং থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
আজ সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করলে আদালত জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমেদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু, গোয়াইনঘাট উপজেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি শাহজাহান ও ফারুক মিয়া নামের এক যুবক।
এদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন দুলু এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৬ নম্বর আসামি। বাকী দুজনকে ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার তোফায়েল আহমেদ।
গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়িবহর আটকে বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে বাধা ও অবৈধ ভাবে অবরোধ করে সরকারি কর্মচারীকে কাজে বাধাদান করার অভিযোগে রবিবার রাতে গোয়াইনঘাট থানার উপ-পরিদর্শক ওবায়দুল্লাহ বাদী হয়ে রোববার রাতে মামলা করেন। এ মামলায় দেলোয়ার ও শাহজাহানকে সিলেট থেকে এবং ফারুক মিয়াকে জাফলং থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার বাদী ও গোয়াইনঘাট থানার উপ-পরিদর্শক ওবায়দুল্লাহ বলেন, দুই উপদেষ্টার গাড়ি বহরের গতি রোধ করে বিক্ষোভের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকালে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও বাধার সম্মুখীন হন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ওইদিন দুপুরে তারা জাফলং বাজার এলাকায় জড়ো হয়ে উপদেষ্টাদের রাস্তা আটকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেয়। এসব বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও বিরূপ অবস্থা দেখা দেয়।
ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, এ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিনসহ স্থানীয় কিছু বালু ও পাথর ব্যবসায়ী। এই ঘটনার পর ওই রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় আর রোববার আজির উদ্দিনকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করে ছাত্রদল।
এ ঘটনায় রবিবার রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও প্রায় ১৫০ জনের নাম অজ্ঞাত রেখে মামলা করে পুলিশ। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান, দ্বিতীয় আসামি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন। এরা ছাড়াও সুহেল আহমদ, ওমর ফারুক, সুমন শিকদার, দেলোয়ার হোসেন দুলু, আব্দুস শুক্কুর, আব্দুস সালাম, আব্দুল জলিলের নাম উল্লেখ করা হয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।