১১ জুন ২০২৫, ১৮:২০

‘বিএনপি নেতা’র গাড়িতে দুই মামলার আসামি কৃষকলীগ নেতা, নাক ফাটালেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা!

বিএনপি নেতা দাবি করা মারধরের শিকার সেই ব্যক্তি  © সংগৃহীত

রাজধানীর কলাবাগান থানা ‘বিএনপির এক নেতা’কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ওই ‘বিএনপি নেতা’কে নাকে-মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়।

ভুক্তভোগী ওই ‘বিএনপি নেতা’র নাম মোহাম্মদ শাহীন। তিনি বিএনপির কলাবাগান থানা ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউনিটের সভাপতি বলে ভিডিওতে দাবি করছেন।

তবে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদল জানিয়েছে, ঘটনার সময় ‘বিএনপি নেতা’ পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির গাড়িতে মহানগর কৃষকলীগের এক নেতা ছিলেন। যার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হত্যাসহ দুটি মামলা রয়েছে। ঘটনার সময় গাড়ির হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে কৃষকলীগের ওই নেতাকে সেই গাড়িতে পাওয়া গেলে ওই ওয়ার্ডের ছাত্রদলের কর্মীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে। 

আজ বুধবার (১১ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘আমি আমার বসকে নিয়ে  ময়মনসিংহ ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে আসছি। সামান্য হর্ন না দেওয়ায় ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের ছেলেরা আমাকে মারধর করেছে। আমি ঢাকার কলাবাগান থানার  ১৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। আমার নেতা সাঈদ ভাই, মজনু ভাই, তানভীর ভাই এবং লাকি ভাই — আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ঘটনার বিচার চাই।’

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘২৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি সোহাগ ভাই কোনো কথা না বলেই প্রথমে আমাকে আঘাত করেন। তার সঙ্গে আরও দুইজন ছিল, যাদের আমি চিনতে পারিনি।’

এ সময় তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিডিওটি শেয়ার করতে বলেন। একইসঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিষয়টি পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান। ভিডিওটি করার সময় তার পেছনে একটি প্রাইভেট কার ছিল।

তবে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গোবিন্দ রায় দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হলে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ওই গাড়িতে মহানগর কৃষকলীগের আসলাম নামে এক নেতা ছিলেন। যার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হত্যাসহ দুটি মামলা রয়েছে। তাছাড়া তিনি ৫ আগস্টের আগে স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করতেন। ঘটনার সময় তাদের গাড়িটি লাগিয়ে দিলে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় দলীয় কোনো নেতা জড়িত নয়, ওই ওয়ার্ডের কিছু কর্মী জড়িত বলে দাবি তার।

ভুক্তভোগী কলাবাগান থানা ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউনিট বিএনপির সভাপতি বলে দাবির বিষয়ে তিনি জানান, সেটি সঠিক জানি না। তবে বিএনপি নেতা হলে কি এই ধরনের আসামিকে প্রশ্রয় দিতে পারেন তিনি, প্রশ্ন তার। তাছাড়া ওই নেতা তো ঘটনাটি তাদেরকে অবহিত করেননি। তারা জেনেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। 

‘চেইন অব কমান্ড থাকবে তো। আমাদেরকে জানাতেন ভুক্তভোগী ওই নেতা। নতুবা এখানকার বিএনপিকেও বিষয়টি জানাতে পারতেন। সেটি সাংগঠনিকভাবে আসতে পারতো। কিন্তু তা আসেনি। ফেসবুকে এখন ভাইরাল হয়েছে। কারা সেটি শেয়ার দিচ্ছে সেটিতো দেখছেন। তার হয়তো ভিন্ন লক্ষ্য ছিল।’