০৪ জুন ২০২৫, ২১:৪০

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নারীর সঙ্গে ছবি তুলে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তারকৃত মো. পাপ্পু ও ফরহাদ আহমেদ  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহ মহানগরীতে এক চিকিৎসকের গাড়িচালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একটি ঘরে আটকে নারীর সঙ্গে জোর করে ছবি তুলে জিম্মি করে মারধর ও টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর আকুয়া গরু খোঁয়াড় মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তি হলেন, আকুয়া বোর্ড ঘর এলাকার বাসিন্দা মো. পাপ্পু (৩৫) ও একই এলাকার মৃত আবদুল জলিলের ছেলে ফরহাদ আহমেদ (২৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ নগরীর ৩ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল হোসেন। 

পুলিশ জানায়, নগরীর চরকালীবাড়ি এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে স্বপন মিয়া (২৯) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত একজন চিকিৎসকের প্রাইভেট কারের চালক। সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মাসকান্দা এলাকায় প্রাইভেট কারটি একটি গ্যারেজে রেখে বের হচ্ছিলেন স্বপন মিয়া। এ সময় ১০–১২ জনের একটি দল স্বপনকে ঘিরে ধরেন। দুজন স্বপন মিয়ার দুই পাশে চাকু ঠেকিয়ে সোজা হেঁটে যেতে বলেন। এরপর তাকে একটি টমটম গাড়িতে (ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার গাড়ি) তুলে আকুয়া গরু খোঁয়াড় মোড় এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান।

ভুক্তভোগীর বরাতে পুলিশ আরও জানায়, গাড়িতে স্বপনের সঙ্গে চালকসহ ছয়জন উঠেছিলেন। গরু খোঁয়াড় মোড় এলাকার বাসার একটি কক্ষে নিয়ে স্বপনকে মারধর করে সেখানে এক নারীকে আনা হয়। এরপর স্বপনকে বিবস্ত্র করে ওই নারীর সঙ্গে ছবি তুলে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের জন্য চলতে থাকে মারধর। একপর্যায়ে স্বপনের স্ত্রীকে ফোন করে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা আনা হয়। এরপর ছেড়ে দেওয়া হয় স্বপন মিয়াকে।  সোমবার রাত ৯টার দিকে গরু খোঁয়াড় মোড় থেকে একটি রিকশায় করে মাসকান্দা এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।   

ভুক্তভোগী স্বপন মিয়া বলেন, ‘গ্যারেজে গাড়ি রেখে বের হতেই চক্রটি অস্ত্র ঠেকিয়ে আমাকে ঘিরে ধরে। নড়াচড়া করলে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। অস্ত্রের মুখে তারা একটি গাড়িতে করে আমাকে একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মারধর করে ও নারীর সঙ্গে ছবি তুলে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আনায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চক্রটির কারও সঙ্গে আমার পূর্বে কোনো বিরোধ ছিল না। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনিও না।’

এ বিষয়ে নগরীর ৩ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল হোসেন বলেন, ‘চাকু ধরে চালক স্বপন মিয়াকে তুলে নেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধী চক্রটিকে আমরা শনাক্ত করে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টার্গেট ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে নারীকে একই ঘরে রেখে ছবি তুলে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছিল। এই চক্রের অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।’