রঙ বদলে সু-প্রভাত এখন সম্রাট!
বাসচাপায় বিউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহতের ঘটনায় সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা শেষে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার পর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনের সড়কে এসে তাঁরা এই ঘোষণা দেন।
মেয়রের কাছে তাঁরা তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরেন। দাবি তিনটি হলো-১. ঘাতক বাসচালকের সর্বোচ্চ শাস্তি, ২. সুপ্রভাত ও জাবালে নুর বাসের লাইসেন্স বাতিল ও ৩. ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ।
এদিকে রাজধানীর সদরঘাট থেকে গাজীপুর মহানগরীর গাজীপুরা রুটে চলাচলকারী ঘাতক ‘সু-প্রভাত স্পেশাল বাস সার্ভিস’ পরিবহনের কিছু বাসের রঙ বদলে এখন ‘সম্রাট ট্রান্সলাইন (প্রা.) লি.’ নামকরণ করা হচ্ছে। বুধবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাজীপুরা এলাকায় সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের রঙ বদলে রাতারাতি সম্রাট পরিবহন নামে পরিবর্তিত হতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা বসুন্ধরা গেট এলাকায় গত মঙ্গলবার সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী। একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মারা যাওয়ার পর রাতারাতি বদলে যাচ্ছে সু-প্রভাত বাসের চেহারা। এ কোম্পানির বিভিন্ন বাস রঙ বদলে সম্রাট পরিবহনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া গাড়ির মালিকরা তাদের সুবিধা মতো কোম্পানিতে নিজেদের বাস অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যস্ত।
একাধিক শ্রমিক, বাসচালক ও সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সু-প্রভাত স্পেশাল বাস সার্ভিসটির রুট পারমিট রাজধানীর সদরঘাট থেকে রামপুরা হয়ে উত্তরা পর্যন্ত। এক প্রভাবশালী পরিবহন নেতার প্রভাবের কারণে চলছে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর গাজীপুরা পর্যন্ত। ৭০টি বাস চলার অনুমোদন থাকলেও চলছে প্রায় সাড়ে তিনশ বাস।
সু-প্রভাতের টঙ্গী স্টেশন রোডের সুপারভাইজার কামরুল ইসলাম জানান, সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের রঙ বদলে অন্য পরিবহনের নামে চলার বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি মালিক কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সু-প্রভাত পরিবহনের কোনো বাস অন্য কোম্পানির নামে পরিবর্তিত হচ্ছে- এমনটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কুড়িলের যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাসে ওঠার সময় পেছন থেকে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এ দুর্ঘটনার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামে।