০৩ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৩

পরীক্ষার হলেই ফেসবুক লাইভে ছাত্রী, অতঃপর.....

  © সংগৃহীত

‘আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছি। এই হচ্ছে প্রশ্নপত্র। কিচ্ছু জানি না। টেস্ট পরীক্ষা দিতে এসে টাইম পাস করছি।’ পরীক্ষা চলাকালীন ফেইসবুকে লাইভে এসে এমনটাই বলছিলেন কলেজছাত্রী সুলক্ষণা মণ্ডল। সে ভারতের পূর্ব বর্ধমানের কালনা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।‘ফেসবুক লাইভ’ দেখে বাইরের কেউ ফোন করে সে কথা জানানোয় টনক নড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের।

অভিযুক্ত ছাত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। তবে কীভাবে ওই ছাত্রী মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকলেন, কয়েক মিনিট ধরে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ভিডিও পাঠানো সত্ত্বেও কেন তা শিক্ষকের নজরে পড়ল না-সে প্রশ্ন উঠেছে।

কালনা কলেজের তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘এই ঘটনাটি আপরাধমূলক। আমাদের কলেজের সম্মানহানি হয়েছে। আমরা চাই ওই ছাত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’

বিকেলে বৈঠকে বসে কলেজের পরিচালন সমিতি। কলেজের অধ্যক্ষ তাপস সামন্ত জানান, ওই ছাত্রী বসার আসন ছিল হলের পিছনের দিকে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র হাতে পাওয়ার পরই ফেসবুক লাইভ করতে শুরু করে। সে মোবাইল লুকিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকেছিল। পরে সে ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছে। তবে তাকে ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে না দেয়ার সুপারিশ করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টা থেকে পাস কোর্সের ‘এডুকেশন’ পরীক্ষা শুরু হয়। তার মিনিট পনেরো পরেই ওই ছাত্রী ‘ফেসবুক লাইভ’ শুরু করেন। তার বন্ধু-তালিকায় থাকা অনেকেই তাতে অবাক হয়ে যান। লাইভে কেউ এসব বন্ধ করে পরীক্ষা দেয়ার পরামর্শ দেন। কেউ লেখেন, ‘এটাই দেখার বাকি ছিল’। এরই মধ্যে কেউ কলেজে ফোন করে বিষয়টি জানান।

বিকেলে পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকেন অধ্যক্ষ। কালনা থানার এক প্রতিনিধিও যোগ দেন। ছাত্রীর মা কলেজে গিয়ে মেয়ের তরফে ক্ষমা চান। ছাত্রীটি পরে বলেন, ‘মজা করতে গিয়ে এমন করে ফেলেছি। আর এই ভুল করব না।’

দিনকয়েক আগেই মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শোরগোল পড়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টার মধ্যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ছিল হোয়াটসঅ্যাপে। তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় কলেজের পরীক্ষা চলাকালীন ফেসবুকে লাইভ করলেন ওই ছাত্রী।