২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:২৩

মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেলেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ২৭ নেতাকর্মী

মোহাম্মদপুর থানা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতাকর্মীরা  © টিডিসি ফটো

থানায় ১২ ঘন্টা আটক থাকার পর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ২৭ নেতাকর্মী। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে শুক্রবার রাতে গণভবন মোড়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করতে গেলে তাদেরকে আটক করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এসময় পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত ৮জন আহত হন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।

আটককৃতদের মধ্যে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আল-মামুনও ছিলেন। এছাড়া ৫ ছাত্রী কর্মীকেও আটক করা হয়। গণভবনসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোন স্থাপনায় আর আন্দোলন করবেন না- এমন মুচলেকা দিয়ে আজ সকালে ছাড়া পান তারা। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টায় আহতদের একাংশ

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সনেট মাহমুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশের হামলা ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া থানায় আটকে রাখার তীব্র প্রতিবাদসহ নিন্দা জানাচ্ছি। এটা পুরো জাতির জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। আমরা মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সম্মান রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বিশ্বাসী। আজ স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ওপর এভাবে পুলিশ পিটিয়ে রক্তাক্ত করবে, এটা কোন সভ্য দেশের প্রশাসনের কাজ নয়।’

শুক্রবার রাতে গণভবন মোড়ে পুলিশের বাধা পেরিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি গাড়িসহ পথচারীদের ৫-৬ টি গাড়ি ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

মুচলেকা

আন্দোলনকারীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, জাতির পিতা ও তার পরিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অবমাননাকরীদের বিরুদ্ধে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি সকল চাকরিতে শতকরা ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহল, সংরক্ষণ, বিশেষ কমিশন গঠন করে প্রিলিমিনারি থেকে শতভাগ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষিত পদগুলো বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। রাজাকারসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, তাদের বংশধরদের সরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও নিয়োগে অযোগ্য ঘোষণা এবং চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকুরিচ্যুত করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি পারিবারিক সুরক্ষা আইনপ্রণয়ন এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সকল প্রকার অপপ্রচার বন্ধ, কোটা, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে স্ব-ঘোষিত রাজাকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাসভবনে হামলাসহ সকল প্রকার অরাজকতা সৃষ্টিকারী স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ও দ্রত আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মের বয়সসীমা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করতে হবে।