ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জন্মদিন উদযাপনে এসে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার ৫ প্রাক্তন

ছাত্রলীগের মারধরের শিকার ঢাবির সাবেক এক শিক্ষার্থী
ছাত্রলীগের মারধরের শিকার ঢাবির সাবেক এক শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

বন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন প্রাক্তন ৫ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে আহতদের কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র আতিক জামানের জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার। সেই উপলক্ষে সে তার বন্ধু ও ক্যাম্পাসের ‘কাছের কয়েকজন বড় ভাই’কে টিএসসিতে আমন্ত্রণ জানান। রাত ১০টার দিকে টিএসসিতে জন্মদিনের কেক কেটে তারা ৭-৮ জন দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। সেখানে ক্যাম্পাসের পরিচিতদের কয়েকজনও তাদের আড্ডায় এসে যোগ দেন।

এর মধ্যে ছিলেন আতিকের ‘হলের বড় ভাই’ ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক কবির মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বিভাগের বন্ধু ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহিদুল ইসলাম সজিব, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্র, আইন বিভাগের বর্তমান এক ছাত্রীসহ বিভাগটির আরও কয়েকজন।

হামলার ঘটনার বর্ণনায় ভুক্তভোগীরা জানান, তারা আড্ডা দিচ্ছিলেন এমন সময় টিএসসিতে অবস্থানরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ৩৫-৪০ জন নেতাকর্মী তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় মাহিদুল ইসলাম সজিব গুরুতর আহত হন। হামলা করা হয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কবির মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও সরকারী কর্মকর্তার ওপরও। লাঞ্ছিত করা হয় আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কবির মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম তার পরিচয় দিলেও তা আমলে নেয়নি ছাত্রলীগ। বরং তার মারধর ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার হতে হয়েছে সরকারী ওই কর্মকর্তাকেও। মারধর করা হয় আরও ৩-৪ জনকে। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা গিয়ে মারমুখী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাত থেকে কবির ও ওই সরকারী কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন। আহতরা চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছেন।

খবর পেয়ে হাসপাতালে তাদেরকে দেখতে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, হামলায় অ্যাডভোকেট সজিবের মাথা ফেটে গেছে। এছাড়া পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারত্মক জখম হয়েছে। ‘ইটের আঘাতে’ থেতলে গেছে শরীরের বেশ কিছু অংশ। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কবির ডান চোখের নিচে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। সরকারী কর্মকর্তার কপালে আঘাত লেগেছে। এছাড়া অন্য ৩-৪ জন সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে সাদ্দাম বলেন, ‘সেখানে একটা মব তৈরি হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক তার কোনো এক বার্থডে পার্টিকে কেন্দ্র করে, কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে একটা ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ছাত্রদলের আমাদের সাবেক এক ঘনিষ্ঠ বড় ভাই আহত হয়েছে, আমাদের আরেক ঘনিষ্ঠ ভাই ক্যাম্পাসের সবার প্রিয় মুখ সেও আহত হয়েছে, আবার আরও এক ছাত্রদল কর্মী আহত হয়েছে। একটা মবের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার সাথে অনেকেই ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের কেউ যদি জড়িত থাকে সেক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এ ধরনের কিছু হয়ে থাকলে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।


সর্বশেষ সংবাদ