গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্টতা, র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ কমিশনের
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনায় তদন্ত কমিশন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকসহ সরকারের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে।
আজ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
কমিশন জানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ পেয়েছে এবং ৭৫৮টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছে। কমিশনের অনুমান, গুমের প্রকৃত সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, এবং ডিবি পুলিশের সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদের নামও উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, যারা এসব গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তারা নিজেরাও অধিকাংশ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন না।
প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা অত্যন্ত জরুরি একটি কাজ করছেন। আপনাদের সব ধরনের সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা অধ্যাপক ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানান।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস, এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন জানিয়েছে, আগামী বছরের মার্চে এ সংক্রান্ত একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে এবং তাদের কাছে আসা অভিযোগগুলো আগামী বছরের মধ্যেই নিষ্পত্তি করার আশা প্রকাশ করেছে।